‘তিনদিনের’ টেস্টেও পরাজয়?

ওয়েলিংটন টেস্টে প্রথম দুইদিনের পুরোটাই ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। সেই হিসেবে আক্ষরিক অর্থেই পরিণত হয়েছে ‘তিনদিনের’ টেস্ট। আর এই তিনদিনের টেস্টেই টাইগারদের শঙ্কা জাগছে ইনিংস পরাজয়ের!

- Advertisement -

সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের তৃতীয় দিনে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল ২১১ রানে। সোমবার (১১ মার্চ) চতুর্থ দিন রান উৎসব করেছে নিউজিল্যান্ড। ২০ রানে দুবার জীবন পেয়ে রস টেলর করেছেন ঝোড়ো সেঞ্চুরি। পরে যেটিকে রূপান্তর করেছেন ডাবলে। সেঞ্চুরি করেছেন হেনরি নিকোলসও। কেন উইলিয়ামসন করেছেন ফিফটি। ৫.০৯ রেটে ৬ উইকেটে ৪৩২ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করেছে নিউজিল্যান্ড।

- Advertisement -google news follower

২২১ রানের লিডের বোঝা মাথায় নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে নেমে বাংলাদেশ ৫৫ রানেই হারায় ওপরের দিকের তিন ব্যাটসম্যানকে। দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেটে ৮০ রান। মোহাম্মদ মিথুন ২৫ ও সৌম্য সরকার ১২ রানে অপরাজিত আছেন। চতুর্থ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটি ২৫। ৭ উইকেট হাতে নিয়ে এখনো ১৪১ রানে পিছিয়ে আছে বাংলাদেশ। শেষ দিনে সফরকারীদের সামনে ম্যাচ বাঁচানোর কঠিন চ্যালেঞ্জ।

আগের দিন শুরুতেই নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারকে ফিরিয়েছিলেন আবু জায়েদ রাহী। এরপর উইকেটে এসেই পাল্টা আক্রমণে দলের ওপর জেঁকে বসা চাপটা দূরে ঠেলার চেষ্টা করেছিলেন রস টেলর। আজ তিনি আউট হতে পারতেন শুরুতেই। কিন্তু জায়েদের তিন বলের মধ্যে দুবার তার ক্যাচ ফেলেন ফিল্ডাররা। সুযোগ নষ্ট করার মাশুল কড়ায়-গন্ডায় দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে।

- Advertisement -islamibank

বেসিন রিজার্ভে ২ উইকেটে ৩৮ রান নিয়ে চতুর্থ দিন শুরু করেছিল নিউজিল্যান্ড। আগের দিনের ১৯ রানের সঙ্গে আজ আর এক রান যোগ করতেই দুবার সুযোগ পান টেলর। জায়েদের বলে প্রথমে শর্ট এক্সট্রা কাভারে তুলনামূলক সহজ ক্যাচ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। এক বল পর স্লিপে একটু কঠিন ক্যাচটা নিতে পারেননি সাদমান ইসলাম।

জীবন পেয়ে সেই জায়েদের পরের ওভারে টেলর হাঁকান টানা তিনটি চার। এরপর আরো বিপজ্জনক হয়ে উঠেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ফিফটি তুলে নেন টেলর-উইলিয়ামসন দুজনই। লাঞ্চের আগে উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে ১৭২ রানের রেকর্ড জুটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। ৭৪ রান করে বাঁহাতি স্পিনারকে ফিরতি ক্যাচ দেন কিউই অধিনায়ক।

এই নিয়ে আটবার সেঞ্চুরি জুটি হলো উইলিয়ামসন ও টেলরের। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি জুটি এখন তাদের। আগের রেকর্ডেও ছিলেন উইলিয়ামসন, টম ল্যাথামের সঙ্গে সাতটি।

তাইজুলের পরের ওভারেই ৯৫ থেকে ছক্কা হাঁকিয়ে টেলর তুলে নেন সেঞ্চুরি। ৬১ বলে ফিফটি ছুঁয়ে পরের পঞ্চাশ করেছেন মাত্র ৩৬ বলে। ৯৭ বলে পূর্ণ করেছেন ক্যারিয়ারের ১৮তম সেঞ্চুরি।

প্রথম সেশনে বাংলাদেশের প্রাপ্তি শুধু উইলিয়ামসনের উইকেটই। লাঞ্চ বিরতিতে নিউজিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ১৯৮। দ্বিতীয় সেশনে কোনো উইকেট না হারিয়ে টেলর ও নিকোলস যোগ করেন ১৭৪ রান। টেলর ১৮৫ ও নিকোলস ৯৩ রান নিয়ে চা বিরতিতে গিয়েছিলেন।

বিরতি থেকে ফিরে ৯৮ থেকে তাইজুলকে চার হাঁকিয়ে নিকোলস তুলে নেন ক্যারিয়ারের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি। নিজের পরের ওভারে বাঁহাতি ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে ২১৬ রানের বড় জুটি ভাঙেন তাইজুল। ১২৯ বলে ৯ চারে নিকোলস করেন ১০৭ রান।

এরপর ১৯৭ থেকে ৩ রান নিয়ে টেলর পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ডাবল সেঞ্চুরি, নিউজিল্যান্ডের তৃতীয় দ্রুততম ২১১ বলে। পরের ওভারে মুস্তাফিজুর রহমানের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে ২১২ বলে ১৯ চার ও ৪ ছক্কায় ঠিক ২০০ রানের ইনিংসটি সাজান ডানহাতি ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে জায়েদের বলে বিজে ওয়াটলিং আউট হতেই ইনিংস ঘোষণা করে নিউজিল্যান্ড।

পিছিয়ে থেকে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম ইকবাল শুরুটা করেন ট্রেন্ট বোল্টকে প্রথম বলেই চার হাঁকিয়ে। কিন্তু পরের বলেই আউট। মিডল স্টাম্পে গুড লেংথে পড়া বলটা তামিমের ব্যাট আর প্যাডের ফাঁক গলে ভেতরে ঢুকে যায়, বোল্ড।

বিদেশের মাটিতে বরাবরই ধুঁকতে থাকা মুমিনুল হক আউট দুটি চার মেরেই। সপ্তম ওভারে ওই বোল্টের বলেই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ক্যাচ দেন থার্ড স্লিপে, ব্যক্তিগত ১০ রানে।

সাদমান ইসলাম আউট হয়েছেন উইকেটে থিতু হয়ে। ম্যাট হেনরির শর্ট বল পুল করতে গিয়ে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। ৪৪ বলে ৪ চারে করেন ২৯। দিনের বাকি সময়ে আর কোনো বিপদ হতে দেননি মিথুন আর সৌম্য। তবে শেষ দিনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে তাদের।

জয়নিউজ/শহীদ
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM