ব্যস্ত শহরের স্বস্তি

সবুজের মাঝে হারিয়ে যেতে চাই। কয়েকদিন ধরে দু’চোখ ভরে সবুজের শোভা দেখার জন্য মনটা আনচান করছে। মন ছুটে যায় এমন এক জায়গায় যেখানে প্রকৃতির মাঝে বসে, বন্ধুদের সঙ্গে প্রাণ খুলে আড্ডা দেওয়া যাবে। বই পড়া যাবে। আড্ডার ফাঁকে নাস্তা করা যাবে। ভালো রেস্তোরাঁই খাওয়া যাবে।

- Advertisement -

ভাবছিলাম খুব কম সময়ে কোথায় যাওয়া যাবে। হঠাৎ মনে পড়ে গেল চেরাগী ও জামাল খান মোড়ের কথা। এমনটি বললেন গৃহশিক্ষিকা রাজিয়া বেগম।

- Advertisement -google news follower

রাজিয়া বেগম আরো জানালেন, চেরাগীর মোড় থেকে জামাল খান মোড় অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করেছে । একসময় জামাল খান এলাকায় রাতে হাঁটাচলা করতে ভয় করতো। এখন রাত বারটা পর্যন্ত বসে আড্ডা দিতে পারছি। পুরো শহরটা যদি এমন হতো!

পতেঙ্গা থেকে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে এসেছেন আনিছুর রহমান। আনিছুর জয়নিউজকে বললেন, জামাল খান এমন একটি জায়গায় রূপান্তর হয়েছে, যা নিয়ে চট্টগ্রাম নগরবাসী গর্ব করতে পারবে। যে কেউ এসে মুগ্ধ হয়ে যাবে। সবুজে-ফোয়ারায় অসাধারণ রূপ ধারণ করেছে নগরের বাতিঘরখ্যাত এই অংশটুকু। আমার মনে হচ্ছে, রাজপথের মাঝখান দিয়ে সবুজের মিছিল চলছে। যা মন ভরিয়ে দেয়।
ব্যস্ত শহরের স্বস্তি | DSC 0727 1

- Advertisement -islamibank

নগরের আড্ডাপ্রিয় মানুষের কোলাহলে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মুখর থাকে চেরাগি পাহাড় এলাকা। মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন দায়িত্ব নেওয়ার পর চেরাগী পাহাড়সহ পুরো জামালখানের সৌন্দর্যবর্ধনে উদ্যোগ নেন। চট্টগ্রামকে একটি পরিচ্ছন্ন সবুজ নগরে পরিণত করার লক্ষ্যে সিটি মেয়র

ক্লিন সিটি-গ্রিন সিটির ডাক দিয়েছিলেন তিন বছর আগে। যার সুফল পেতে শুরু করেছে নগরবাসী। ক্লিন সিটি-গ্রিন সিটি শুধু কথায় না রেখে, কাজে পরিণত করে দেখিয়েছেন তিনি।
ব্যস্ত শহরের স্বস্তি | DSC 0726

এ বিষয়ে জামাল খান ওয়ার্ড কাউন্সিলর শৈবাল দাশ সুমন জয়নিউজকে বলেন, সিটি মেয়রের অনুপ্রেরণা ও সার্বিক সহযোগিতায় জামালখানের সৌন্দর্যবর্ধন ও সবুজায়নের কাজ শুরু করি। ইতোমধ্যে বিশ্বমানের যাত্রীছাউনি, বিউটিফিকেশন, ফোয়ারা, ম্যুরাল ইত্যাদির কাজ শেষ করা হয়েছে। শিগগির ফিস অ্যাকুরিয়াম ও বার্ড জোন করা হবে। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখান থেকে অনেককিছু শিখতে পারবে।

মন থেকে চাইলে সব সম্ভব জানিয়ে তিনি বলেন, ইচ্ছে থাকলে সবকিছুই সম্ভব। আগে জামালখান মোড় সন্ধ্যার পর ছিনতাইকারী ও মাদকসেবীদের অভয়ারণ্যে পরিণত হতো। দুর্গন্ধে নাকে রুমাল দিয়ে চলতে হতো। এখন সে জামালখান মানুষ দেখতে আসে, আড্ডা দিতে আসে।
ব্যস্ত শহরের স্বস্তি | DSC 0681

কিছুদিনের মধ্যে জামালখান আরো নয়নাভিরাম হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, একসময় পুরো বাংলাদেশের লোক জামালখান দেখতে আসবে।
জামালখান মোড়ের ডা. এম এ হাশেম চত্বরের ফোয়ারা পথচারীসহ সবার নজর কেড়েছে। অন্যদিকে খাস্তগীর স্কুলের পোড়ামাটির (টেরাকোটা) শিল্পকর্মে লেখা ‘ইতিহাস’ পড়তে ভিড় করেন সব বয়সের মানুষ।
ব্যস্ত শহরের স্বস্তি | DSC 0779

এ বছরের মহান একুশে ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করা হয় শতবর্ষী ডা. খাস্তগীর সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালের ম্যুরালটি। এতে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের মহানায়ক মাস্টারদা সূর্য সেন থেকে শুরু করে ছয় দফা, সাত মার্চের ভাষণ, মুক্তিযুদ্ধ, পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পণ, সাত বীরশ্রেষ্ঠ, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, শাপলা, মঙ্গল শোভাযাত্রা ইত্যাদি পোড়ামাটির শিল্পকর্মের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিদিন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত মুখর থাকে জামালখান মোড়। দৃষ্টিনন্দন হওয়াতে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে স্থানীয়দের পাশাপাশি অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক আসেন সৌন্দর্য বর্ধনকৃত এলাকায় হাঁটতে। বিকাল গড়াতেই অনেক লোক সমাগম হয় টাইলসকৃত ফুটপাত এলাকায়। কেউ দাঁড়িয়ে, কেউ বসার স্থানে, কেউ আবার হাঁটাহাঁটি করে। লোক সমাগমের এ দৃশ্য থাকে মধ্যরাত পর্যন্ত।

জয়নিউজ/আরসি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM