বন্দরে নতুন যন্ত্রপাতি, কমেছে জাহাজ জট

নতুন করে আরো ছয়টি গ্যান্ট্রি ক্রেনসহ অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি যুক্ত হওয়ার পর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের কাজে গতি বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে কনটেইনার হ্যান্ডেলিং। ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে কম সময়ে তাদের পণ্য খালাস করতে পারছেন।

- Advertisement -

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা যায়, বন্দরে এখন কমেছে জাহাজ জট। আগে জাহাজ থেকে কনটেইনার নামানোর পর দীর্ঘসময় ধরে তা পড়ে থাকত বন্দরে। তবে নতুন যন্ত্রপাতি আনার ফলে দ্রুত খালাস করা যাচ্ছে পণ্য। ব্যবসায়ীরাও এর সুফল পেতে শুরু করেছেন।

- Advertisement -google news follower

বন্দরে আগে অপেক্ষমাণ জাহাজকে প্রতিদিন গুণতে হত ৮ থেকে ১০ হাজার ডলার। বন্দরের পক্ষ থেকে নতুন করে ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ও তিনটি স্ট্রাডল ক্যারিয়ার কেনার পর থেকে এই অতিরিক্ত খরচ অনেকটাই কমে গেছে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব ওমর ফারুক জয়নিউজকে বলেন, বন্দরে এখন কনটেইনার হ্যান্ডেলিংয়ের পরিমাণ বেড়েছে, কমেছে জাহাজ জট। নতুন যন্ত্রপাতি কেনার সুফল তাই ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন বন্দর ব্যবহারকারীরা।

- Advertisement -islamibank

যন্ত্রপাতি ক্রয় বন্দরের চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুরানো যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে গেলে এমনিতেই নতুন কিনতে হয়। এবার কার্গোর প্রবৃদ্ধি থেকে বন্দরের জন্য ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন ও তিনটি স্ট্রাডেল ক্যারিয়ার কেনা হয়েছে।

বন্দর সূত্রে আরো জানা যায়, আমদানি পণ্য দ্রুত খালাসের জন্য ৬০ লাখ টাকায় চীনের জেডপিএমসি কোম্পানি থেকে সাইফ পাওয়ারটেক লিমিটেডের মাধ্যমে ছয়টি রাবার টায়ার্ড গ্যান্ট্রি ক্রেন (আরটিজি) কেনা হয়েছে। ইতিমধ্যে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনালে তিনটি এবং চিটাগাং কনটেইনার টার্মিনালে তিনটি আরটিজি বসানো হয়েছে। প্রতিটি আরটিজি ক্রয় বাবদ ব্যয় হয়েছে ১০ লাখ টাকা। এছাড়া চলতি মাসের শেষ দিকে জার্মানি থেকে ২৪ লাখ টাকায় তিনটি স্ট্রাডেল ক্যারিয়ার আনা হচ্ছে। প্রতি স্ট্রাডেল ক্যারিয়ার বাবদ ব্যয় হচ্ছে ৮ লাখ টাকা।

বন্দরনগরের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বন্দরের গতিশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ার সুফল ইতিমধ্যেই পেতে শুরু করেছেন তারা। আগে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে আমদানি পণ্য জাহাজ থেকে নামার পরেও পড়ে থাকত। তবে এখন দ্রুত পণ্য খালাস হয়ে যাচ্ছে।

খাতুনগঞ্জ ট্রেড এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দ ছগীর আহমেদ জয়নিউজকে বলেন, আগে বন্দরে জাহাজ জট ছিল নিত্যদিনের ব্যাপার। এখন এই জাহাজ জট অনেকাংশেই কমে এসেছে। এছাড়া জাহাজ থেকে নামার পরও আমদানি পণ্য বন্দরে পড়ে থাকত অনেকদিন। কিন্তু নতুন যন্ত্রপাতি আনার ফলে দ্রুত পণ্য খালাস হয়ে যাচ্ছে। ব্যবসায়ীরাও এর সুফল পাচ্ছেন।

তবে বন্দরের অবকাঠামো আরো উন্নয়ন করা দরকার বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৮৭ টিইইউএস কনটেইনার পণ্য হ্যান্ডেলিং হয়েছে। এরমধ্যে আমদানিকৃত কনটেইনারের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৮৭৬ টিইইউএস। অন্যদিকে রপ্তানি হয়েছে ১ লাখ ২৩ হাজার ২১১ টিইইউএস কনটেইনার। প্রতিদিন গড়ে দৈনিক ৭ হাজার ৬৮০ টিইইউএস কনটেইনার উঠানামা হয়েছে বন্দরে।

এদিকে নতুন যন্ত্রপাতি যোগ হওয়ার সুফল পাচ্ছেন জাহাজ মালিকরাও। আগে অপেক্ষমাণ জাহাজের জন্য যে বাড়তি খরচ থেকে গুণতে হত, এখন আর তা হচ্ছে না।

শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আহসানুল হক চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, বন্দরে নতুন যন্ত্রপাতি যুক্ত হওয়াতে জাহাজ জটের পরিমাণ কমে গেছে। এখন অনেক কম সময়ে জাহাজ থেকে পণ্য খালাস হচ্ছে। যে কারণে আমাদের এখন আর বাড়তি খরচ গুণতে হচ্ছে না।

জয়নিউজ/জুলফিকার
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM