নগরের বিভিন্ন স্থানে চলছে পানির জন্য হাহাকার। গত কয়েকদিন ধরে এসব এলাকায় ওয়াসার পানির সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে দৈনন্দিন কাজ-কর্মে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এসব এলাকার মানুষকে। নগরবাসীর পানির জন্য এমন হাহাকারের মধ্যেই শুক্রবার (২২ মার্চ) দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘পানির মৌলিক অধিকার থেকে কাউকে বঞ্চিত করা যাবে না।’
সরেজমিনে দেখা যায়, নগরের জামালখান, আসকার দিঘীর পাড়, কদমতলী, পূর্ব মাদারবাড়ী, নাজিরপোল, পাহাড়তলী, আমবাগান, সরাইপাড়া, মধ্যম হালিশহরসহ বেশ কিছু এলাকায় গত কয়েকদিন ধরে ওয়াসার পানি সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দারা গৃহস্থালি কাজে পানির সংকটে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। অনেকেই পানি সংগ্রহ করে আনছেন দূর-দুরান্ত থেকে।
কাজীর দেউড়ি এলাকার বাসিন্দা সোহরাব হোসেন জয়নিউজকে বলেন, গত তিন দিন ধরে বাসায় পানি আসছে না। খুব কষ্টের মধ্যে আছি। ওয়াসাতে গিয়ে অভিযোগ দিয়েছি। তারা বলেছে শিগগির পানি আসবে। গরম চলে এসেছে। এখন যদি এভাবে পানির সমস্যা থাকে তাহলে দৈনন্দিন কাজ-কর্ম কিভাবে করবো?
নগরজুড়ে পানির সমস্যা সম্পর্কে জানতে চাইলে ওয়াসার প্রধান প্রকৌশলী ইয়াকুব সিরাজ-উদ-দৌল্লাহ জয়নিউজকে বলেন, নগরের কলেজিয়েট স্কুলের পাশে গভীর নলকূপ মেরামতের কাজ চলছে। এজন্য সেখানকার কিছু এলাকায় পানি সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটেছে।
তিনি আরও বলেন, পানির চাপের কারণে বহদ্দারহাট এলাকায় একটি পাইপলাইন লিকেজ হয়ে যাওয়ার কারণে নগরের বেশ কিছু এলাকায় পানি সরবরাহ স্বাভাবিক ছিল না। তবে ইতোমধ্যে পাইপলাইন সংস্কার হওয়ায় পানি সরবরাহ শুরু হয়েছে। আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো নগরে পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে যাবে।
এদিকে, নগরবাসীর পানির জন্য হাহাকারের মধ্যেই দেশব্যাপী পালিত হচ্ছে বিশ্ব পানি দিবস। ১৯৯৩ সালে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ২২ মার্চ তারিখটিকে বিশ্ব পানি দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের রিও ডি জেনিরোতে জাতিসংঘ পরিবেশ ও উন্নয়ন সম্মেলনের (ইউএনসিইডি) এজেন্ডা ২১-এ প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালনের আনুষ্ঠানিক প্রস্তাবটি উত্থাপিত হয়। ১৯৯৩ সালে প্রথম বিশ্ব পানি দিবস পালিত হয় এবং তারপর থেকে এই দিবস পালনের গুরুত্ব ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে।
জাতিসংঘের সদস্য দেশগুলি এই দিনটিকে নিজ নিজ রাষ্ট্রসীমার মধ্যে জাতিসংঘের জলসম্পদ সংক্রান্ত সুপারিশ ও উন্নয়ন প্রস্তাবগুলির দিকে মনোনিবেশের দিন হিসেবে উৎসর্গ করেন। প্রতি বছর বিশ্ব পানি দিবস উপলক্ষে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার যেকোনো একটি বিশেষ কর্মসূচি পালন করে থাকে।
জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাও পরিচ্ছন্ন জল ও জলসম্পদ রক্ষা সম্পর্কে জনসচেতনতা গড়ে তোলার জন্য এই দিন বিশেষ কর্মসূচির আয়োজন করেন। ২০০৩, ২০০৬ ও ২০০৯ সালে জাতিসংঘ বিশ্ব জল উন্নয়ন প্রতিবেদন বিশ্ব পানি দিবসেই প্রকাশ করা হয়েছে।