দীর্ঘদিন লোকলজ্জার ভয়ে নীরব থাকলেও এবার বীরাঙ্গনার স্বীকৃতি চান লোহাগাড়ার রত্না চক্রবর্তী।
এজন্য ২০১৫ সালের এপ্রিল মাসে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আবেদন করেন তিনি। কিন্তু এখনও সরকারিভাবে তালিকাভুক্ত হতে পারেননি। বর্তমানে রত্না চক্রবর্তী নগরের একটি বিপনী বিতানে ঝাড়ুদারের কাজ করেন। খেয়ে না খেয়ে তাঁর দিন কাটছে।
যুদ্ধকালীন স্মৃতিচারণে রত্না চক্রবর্তী জানান, লোহাগাড়ার সুখছড়ি গ্রামে তাঁর পৈত্রিক নিবাস। ১৯৭১ সালের ৩০ এপ্রিল দিনের বেলায় হঠাৎ পাকিস্তানি সৈনারা গ্রামের ব্রাক্ষণপাড়া, রাজবাড়ী, কলাউজানের হিন্দুপাড়ায় লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ওইদিন সৈন্যরা গ্রামবাসীর ওপর নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে ঘটনাস্থলে ৭ জন শহীদ হন। যুদ্ধকালীন সময়ে দোহাজারী ক্যাম্পের বাইরে প্রায় মৃত অবস্থায় আমাকে উদ্ধার করেন বাদল চক্রবর্তী। পরে আমাদের বিয়ে হয়। ২০১৫ সালের জুলাই মাসে স্বামী মারা যান।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রত্না চক্রবর্তীর মা হিরন বালা দাশ (৯০) জানান, ওইদিন পাকবাহিনী আমার নিরপরাধ স্বামী ও দেবরকে গুলি করে হত্যা করে এবং যাওয়ার সময় ছোট মেয়ে রত্নাকে তুলে নিয়ে যায়। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা রফিক দিদারও এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে ইউএনও আবু আসলাম জানান, রত্না চক্রবর্তীর আবেদন পাওয়ার পর সুখছড়ি গ্রামে সরেজমিন তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। তদন্ত প্রতিবেদন জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে (জামুকা) পাঠানো হয়েছে।