সংগঠনের চেয়ে ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত যুবলীগ নেতারা

২০১৩ সালের ১৩ জুলাই চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয় কেন্দ্র থেকে। তিন মাসের জন্য গঠন করা হলেও  ছয় বছর পার করেছে এ কমিটি।  এ অবস্থায় ৬ বছর ধরে যুবলীগের নতুন নেতৃত্ব যেমন গড়ে ওঠেনি, তেমনি সাংগঠনিক কার্যক্রমও ঝিমিয়ে পড়েছে। এছাড়া জমি দখল, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, টেন্ডারবাজি, কিশোর গ্যাং, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ রয়েছে যুবলীগের একাধিক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে।

- Advertisement -

সাধারণ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, নগর যুবলীগের আহ্বায়কসহ গুরুত্বপূর্ণ পদধারী ৩ নেতা ব্যস্ত রয়েছেন ব্যবসা-বাণিজ্যে। এছাড়া নগর যুবলীগের কমিটির শীর্ষ পদধারীরা যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুকের আশীর্বাদপুষ্ট হওয়ায় তারা কাউকে পাত্তা দিতো না। তবে যুবলীগ চেয়ারম্যানকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়েছে তারা।

- Advertisement -google news follower

যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে আহ্বায়কের দায়িত্বে আছেন মহিউদ্দিন বাচ্চু। যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয় দেলোয়ার হোসেন খোকা, দিদারুল আলম, ফরিদ মাহমুদ ও মাহবুবুল হক সুমনকে। প্রথম পাঁচজনের সবাই সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে যুবলীগের রাজনীতিতে পরিচিত। ১০১ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটিতে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী ৮ জনকে সদস্য হিসেবে রাখা হয়।

সূত্র জানায়, নির্দেশনা ছিল এই কমিটি তিন মাসের মধ্যে সম্মেলন করে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবে। কিন্তু ৬ বছরে মাত্র ৫টি ওয়ার্ডে সম্মেলন করতে পেরেছে নগর যুবলীগ।

- Advertisement -islamibank

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নগর যুবলীগের গুরুত্বপূর্ণ পাঁচ নেতার মধ্যে তিনজনই ব্যবসায়ী। আহ্বায়ক মহিউদ্দিন বাচ্চু ও যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বিলবোর্ড ব্যবসার একচেটিয়া নিয়ন্ত্রক ছিলেন। বিলবোর্ড উচ্ছেদের পর বর্তমানে বাচ্চু ও ফরিদ রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। দেলোয়ার হোসেন খোকারও রয়েছে রিয়েল এস্টেট ব্যবসা। একইভাবে নগর যুবলীগের সভাপতি পদপ্রত্যাশী বিদেশে পলাতক হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর রেলওয়ের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সিআরবিতে সংঘটিত ডাবল মার্ডার মামলার আসামি হন। এ কারণে তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগ থেকে বহিষ্কারও হয়েছিলেন।

দীর্ঘদিন ধরে নগর যবুলীগের কোনো কর্মকাণ্ড নেই। কোনো বিশেষ দিবসে ফুল দেওয়া ও সভার করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ যুবলীগের কর্মকাণ্ড। এতে কার্যত অচল কমিটি নিয়ে অসন্তোষ বাড়ছে দলের ভেতরে বাইরে। সেই অসন্তোষ আরো বেড়েছে সামনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন নিয়ে।

ইতিমধ্যে ২৩ নভেম্বর যুবলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণের ডেলিগেট কারা বা সম্মেলনে কিভাবে, কারা অংশগ্রহণ করবে সেটি নিয়েও সৃষ্টি হয়েছে জটিলতা। কারণ একদিকে নগর যুবলীগের সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে অন্যদিকে একটি বৃহৎ গ্রুপের অধিকাংশ নেতাদের বাদ দিয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণ করাটাকে সংগঠন বিরোধী বলছেন সংশ্লিষ্টরা।

কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক সদস্য আবদুল মান্নান ফেরদৌস জয়নিউজকে বলেন, ‘নগর যুবলীগের সাংগঠনিক অবস্থা খুবই নাজুক। সমন্বয় না করা এবং দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় সাংগঠনিক কাঠামো ভেঙে পড়েছে। নগরে যবুলীগের অনেক নেতাকর্মী রয়েছে। কিন্তু কমিটি না হওয়ার কারণে তারা হতাশ হচ্ছে। অতি শীঘ্রই কমিটি গঠনের দাবি জানান তিনি।

ফিরিঙ্গিবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব জয়নিউজকে বলেন, ‘তিন মাসের জায়গায় ৬ বছর সময় পেয়েছেন নেতারা। এই সময়ের মধ্যে চাইলে সংগঠনকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অনেক শক্তিশালী ও মজবুত করতে পারতেন। সামনের কেন্দ্রীয় সম্মেলন। আমরা চাইবো খুব শীঘ্রই নগর কমিটি করা হোক।

এ বিষয়ে জানতে নগর যবুলীগের মহিউদ্দিন বাচ্চুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি যুবরীগের কমিটির বিষয় কথা বলবেন না বলে ফোন কেটে দেন। পরে বার বার ফোন করলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।

জয়নিউজ/পিডি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM