রাতেও শেষ হয়নি মধ্যরাতের ধর্মঘট

পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) মধ্যরাত থেকে দাবি আদায়ে দেশজুড়ে ধর্মঘট পালন করছেন নৌযান শ্রমিকরা। এ কারণে চট্টগ্রামেও বন্ধ রয়েছে সব লাইটার জাহাজের কার্যক্রম। শনিবার রাত সাড়ে ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মালিক-শ্রমিকদের মধ্যে কোনো সমঝোতা হয়নি।

- Advertisement -

কর্ণফুলীর উভয় পাড়ে রয়েছে ১৬টি জেটি। এছাড়া রয়েছে কাফকো ও সাইলো জেটি। ধর্মঘটের কারণে এসব জেটিতে লাইটার জাহাজগুলো অলস দাঁড়িয়ে রয়েছে। ফলে বেকার দিনযাপন করছেন কয়েক হাজার শ্রমিক

- Advertisement -google news follower

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক জয়নিউজকে বলেন, নৌযান শ্রমিকদের ধর্মঘটে সকারে কাজ চললেও দুপুর থেকে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে কনটেইনার হ্যান্ডলিং স্বাভাবিক রয়েছে।

সর্বশেষ তথ্যমতে, চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থান করছে ৫২টি জাহাজ। এর মধ্যে ৪৭টি লাইটার জাহাজে পণ্য বোঝাই চলছিল। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে পাথর, কয়লা, সিমেন্ট ক্লিংকারসহ নানা ভোগ্যপণ্য।

- Advertisement -islamibank

দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মবিরতি

নৌযান শ্রমিক নেতারা বলছেন, তারা জাহাজ মালিকদের বারবার সময় দিয়েছিল। মন্ত্রীদের মধ্যস্থতায় ধর্মঘটও স্থগিত করা হয়েছিল। কিন্তু মালিকরা কথা রাখেননি। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট, কর্মবিরতি, মিটিং-মিছিল চলবে।

বাংলাদেশ লাইটারেজ শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি মো. আবদুর রহিম জয়নিউজকে বলেন, দাবি মানতে মালিকদের আমরা অনেক সময় দিয়েছি। এখন আর কোনো সময় দেওয়া হবে না। আমাদের দাবির প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে মাননীয় শ্রম প্রতিমন্ত্রী জাহাজ মালিকদের বৈঠকে ডেকেছিলেন। কিন্তু তারা বৈঠকে উপস্থিত না হয়ে চরম ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। দেশের ৪ হাজার লাইটার জাহাজে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে আমাদের পাঁচ লক্ষাধিক শ্রমিক রয়েছেন। দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা রাস্তায় থাকব।

চট্টগ্রাম নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সদস্য সচিব মো. জলিল সিকদার জয়নিউজকে বলেন, মালিকরা যদি আমাদের দাবি না মানেন তবে মালিকদের জাহাজ বুঝিয়ে দিয়ে উপকূলে এসে শ্রমিকরা অন্য পেশায় চলে যাবে।

তিনি বলেন, নার্গিস, আইলা, সিডরসহ নানা প্রতিকূল আবহাওয়ায় আমরা তাদের সম্পদ রক্ষা করতে নিজের জীবন বিপন্ন করে নদী-সাগরে থাকি। সেই কথাটি তাদের বুঝতে হবে। এভাবেতো আর জাহাজ মালিকদের চলতে দেওয়া যায় না।

আলোচনায় রাজি মালিকরা

জাহাজ মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, দূর্বার গতিতে এগোচ্ছে দেশের উন্নয়ন। এ ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতেই শ্রমিকরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। গতবছর সরকারের মধ্যস্থতায় শ্রমিক নেতারা বলেছিলেন আগামী পাঁচ বছর আর কোনো আন্দোলন করবেন না। তাহলে হঠাৎ এ কেমন আন্দোলন?

দেশকে এগিয়ে নিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে চট্টগ্রাম ইনল্যান্ড ভ্যাসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন সভাপতি হাজি সফি জয়নিউজকে বলেন, ধর্মঘট নয়, আসুন আমরা আলোচনার টেবিলে বসে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করে সরকারের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে আরো বেগবান করি।

প্রসঙ্গত, নৌযান শ্রমিকদের নিয়োগ/পরিচয়পত্র ও সার্ভিসবুক প্রদান, সামাজিক নিরাপত্তা, খাদ্য ভাতা ও সি এলাউন্স প্রদান, ভারতগামী জাহাজের ল্যান্ডিংপাস, নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ, মেরিন আইনের সঠিক বাস্তবায়নসহ ১১ দফা দাবি আদায়ে ধর্মঘট পালন করছে শ্রমিকরা।

জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM