সবুজায়ন ও পরিচ্ছন্ন শহর- কে না ভালোবাসে। পরিচ্ছন্ন ও সবুজায়নে আচ্ছাদিত শহর দেখলেই আমরা সবাই মুগ্ধ ও আনন্দিত হই। এই ধরণের শহরের প্রতি থাকে সকলের ভালোবাসা। দুর্গন্ধমুক্ত নির্মল বাতাসে প্রাণভরে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় সেই শহরে। তেমনি এক শহর গড়তে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে নগরসেবা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)।
এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। তিনি নিজেই স্বপ্ন দেখেন এবং মানুষকেও দেখান, ক্লিন ও গ্রিন চট্টগ্রাম নগর গড়ার। স্বপ্ন দেখেন এলাকার শিশু-কিশোর তরুণদের বাংলাদেশের ইতিহাসের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার। এ লক্ষ্য নিয়ে সিটি মেয়রের পথচলা।
একসময় যেসব এলাকার ফুটপাত দিয়ে দুর্গন্ধে হাঁটাচলা করা যেত না, সেখানে এসেছে নান্দনিকতার ছোঁয়া। সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় সেজেছে নগর। এর অংশ হিসেবে রোববার (১৯ জানুয়ারি) রাতে দক্ষিণ খুলশীতে সৌন্দর্যবর্ধন কাজের উদ্বোধন করেন সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।
আরো পড়ুন: চলতিপথে মুগ্ধতা, নান্দনিক নগরে স্বাগত
এসময় সিটি মেয়র এলাকার সৌন্দর্য রক্ষায় এলাকাবাসীকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে বলেন, এই এলাকা আপনাদের। এটির পরিবেশ ধরে রাখার দায়িত্বও আপনাদের। এই সৌন্দর্যবর্ধনের ফলে পথচারীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি সবুজনগরী গড়তে নগরবাসিকে অনুপ্রাণিত করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
দক্ষিণ খুলশীর ১নং রোডের দু’পাশে ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে আলোকায়ন, সবুজায়ন ও সৌন্দর্যবর্ধনসহ নানামুখী উন্নয়ন করা হয়েছে। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে মিডিয়া ট্রেন্ডস নামক সংস্থা। আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে ৫ বছর মেয়াদ পর্যন্ত তারা এ প্রকল্প দেখভাল করবেন। দীর্ঘদিন ধরে এই স্থানটি ছিল অবৈধ স্থাপনা ও দুষ্টু প্রকৃতির লোকদের অবাধ বিচরণস্থল। আরো ছিল ময়লা-আবর্জনার স্তুপ।
আরো পড়ুন: মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে নান্দনিক বিমানবন্দর সড়ক
এই সড়কে দুর্গন্ধে জনসাধারণের চলাচল করতে এক বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হতো। নগরে চলমান সৌন্দর্যবর্ধনের ধারাবাহিকতায় এই এলাকার ফুটপাতে টাইলস, যাত্রীছাউনি, পথচারীদের বসার স্থান, আলোকায়ন ও সবুজায়নের ফলে এখন পথচারীদের আর নাকে কাপড় দিয়ে হাঁটতে হয় না। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন হলে এলাকাটি একটি হেলদি এলাকা হিসেবে পরিণত হবে।
ইতোমধ্যে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্পের আওতায় নগরের এয়ারপোর্ট রোড, টাইগারপাস রোড, লালখান বাজার, কাজির দেউরি, আউটার স্টেডিয়াম, আন্দরকিল্লা, জামালখান, চট্টেশ্বরী ও প্রবর্তক মোড়ে আইয়ুব বাচ্চুর সেই রূপালি গিটার, বারিক বিল্ডিং মোড়, নিউমার্কেট মোড়, রেডিসন ব্লু মোড়, জিইসি মোড়ের মতো গোলচত্বরগুলোকে সাজানো হয়েছে ভিন্ন আঙ্গিকে।
আরো পড়ুন: পুরো চট্টগ্রাম সাজবে নান্দনিক সাজে: মেয়র
যাত্রীদের অপেক্ষার সুবিধার্থে আধুনিক যাত্রীছাউনি স্থাপন করা হয়েছে। এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের পূর্ব এবং উত্তর পাশের ফুটপাতসহ আউটার স্টেডিয়ামে বাগান নির্মাণ করা হয়েছে। ফুটপাতে বসানো হয়েছে টাইলস, আইল্যান্ড ও মিডিয়ানে লাগানো হয়েছে বাহারি ধরণের ফুলের গাছ।
এছাড়া নগরের জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে বসানো হয়েছে বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল এবং গোলচত্বরে বসানো হয়েছে নগর বরণ্যে ব্যক্তিদের ম্যুরাল। এছাড়া ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সড়কে নৌকার উপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৃষ্টিনন্দন ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর মো. হোসেন হিরন, সংরক্ষিত ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবিদা আজাদ, চসিক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ একেএম রেজাউল করিম, মিডিয়া ট্রেন্ডস্ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফয়সল জিয়া ও সিইইউ তৌহিদুল ইসলামসহ স্থানীয়রা।