করোনাকালে প্রযুক্তিই খুলেছে তরুণদের কর্মসংস্থানের পথ

করেনাভাইরাসের মহামারির কারণে দেশের প্রায় সব ব্যবসা-বাণিজ্যে ও শিল্প প্রতিষ্ঠানে চলছে স্থবিরতা। তেমনি বন্দরনগরী চট্টগ্রামে সংকুচিত হয়ে পড়েছে অথনৈতিক কর্মকাণ্ড। তবে থেমে নেই উদ্যমী তরুণ উদ্যোক্তারা। বেশ কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা নগরে বেশ বড় পরিসরে শুরু করেছেন ই-কমার্স সাইট। প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী থেকে শুরু করে চিকিৎসাসামগ্রী-ওষুধ পৌঁছে দিচ্ছেন ক্রেতার দৌঁড়গোড়ায়। এ প্রযুক্তিভিত্তিক প্ল্যাটফর্মে যেমন অনেক তরুণের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে তেমনি ক্রেতারাও ঘরেই বসেই প্রয়োজনীয় সব পণ্য কিনতে পারছেন।

- Advertisement -

জানা গছে, ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা শনাক্ত হয়। পরে ২৬ মার্চ সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সরকার। প্রায় দুই মাস বন্ধ ছিল দেশের বিপণিবিতানগুলো। ঈদের মৌসুমেও খোদ নগরে খুলেনি বড় বড় শপিং সেন্টারগুলো। আর পুরো করোনাকালই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জন্য অফলাইনে ভরসা ছিল পাড়া মহল্লার মুদি দোকান এবং সুপার শপ। তবে ঘর থেকে বের হয়ে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে কেনাকাটা করতে হয় বলে ছিল স্বাস্থ্যঝুঁকিও।

- Advertisement -google news follower

এখনো সারাদেশের মতো চট্টগ্রামে প্রতিদিন বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা। করোনায় আক্রান্তের ভয়ে কেউ আগের মতো ঘর থেকে বাইরে যাচ্ছে না। ঘরে বসে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা ফোনে অর্ডার দিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনছেন ক্রেতারা। অর্ডার পাওয়ার পর নগরের মধ্যে বিক্রয় প্রতিনিধির মাধ্যমে এবং নগরের বাইরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ডেলিভারি করা হচ্ছে পণ্য। আগেও অনলাইনে বা ফোনে অর্ডার করে পণ্য নিতেন কিছুসংখ্যক ক্রেতা। কিন্তু করোনা মহামারির মধ্যে এ খাতে ব্যবসা বেড়েছে কয়েকগুণ।

এখন অনেক ক্রেতাই হাতের মুঠোফোনটির সাহায্যেই সেরে নিচ্ছেন বাজার। জরুরি প্রয়োজনে ওষুধ-চিকিৎসা সংক্রান্ত যন্ত্রপাতি কিংবা সুরক্ষা সামগ্রী কম সময়ের মধ্যেই সহজে কিনতে পারছেন প্রযুক্তিনির্ভর এ প্ল্যাটফর্মে। এতে এ ধরনের কেনাকাটায় মধ্যবিত্তের শ্রেণীও অভ্যস্ত হয়ে উঠছেন। তাই করোনা মহামারির ভেতর আয়ের একটি বিকল্প পথ খুঁজে পেয়েছেন তরুণরা।

- Advertisement -islamibank

করোনাকালে প্রযুক্তিই খুলেছে তরুণদের কর্মসংস্থানের পথ | 5555

সম্প্রতি নিত্যপ্রয়োজনীয় সব সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে কয়েকজন তরুণ উদ্যোক্তা নগরে চালু করেছেন বাজারদিবডটকম (www.bazardibo.com) নামে একটি ওয়েবসাইট। এ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে পাইকাররি দামে কেনা যাবে প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য।

বাজারদিবডটকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিপ্লব পার্থ জয়নিউজকে বলেন, করোনার এ সংকটকালে আমরা মানুষকে ঘরে রাখতে চাই। সে হিসেবে আমরা খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারের দামে চাল-ডালসহ সব ধরনের নিত্যপণ্য ঘরে পৌঁছে দেই। এখানে লাভের হিসাবটা খুব একটা বিবেচনা করছি না আমরা। আমাদের চিন্তা গ্রাহকদের ভালো সার্ভিস ও ভালো মানের পণ্য পৌঁছে দেওয়া। পরে করোনা সংকট কেটে গেলে ব্যবসায় লাভের মুখ দেখতে পারবো। আপাতত লাভের চেয়ে মানুষের সেবার দিকটাই দেখছি। তারপরও যা লাভ হচ্ছে তাতে আমরা সবাই সন্তুষ্ট।

এমন আরেকটি প্রযুক্তিনির্ভর কেনাকাটার প্ল্যাটফর্ম ওলেবিডি.কম/শপ ((oleeybd.com/shop)। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো.রেজাউল করিম বলেন, আমরা মূলত মানুষকে ঘরে রাখার উদ্দেশ্যে ওলেবিডি.কম/শপ কর্যক্রম শুরু করি। আমরা সব ধরনের সুরাক্ষা সামগ্রী, নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, বিভিন্ন ব্যান্ডের কাপড়সহ ইলেকট্রনিক পণ্য খুচরা বাজার দরেই ঘরে পৌঁছে দিই। আবার এখান থেকে প্রতিদিন যা লাভ হয়, তা নিজেদের পকেটে না রেখে অসহায় মানুষের জন্য ব্যয় করি।

তিনি আরো বলেন, করোনায় সবকিছু বন্ধ হলেও জীবনযাত্রা ও অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহারের বিকল্প নেই। ইন্টারনেটনির্ভর হতে পারলে ব্যবসা, শিক্ষা, চাকরিসহ সবকিছুতে খরচ ও ভোগান্তি কমে আসবে।

তবে অনেক ক্রেতা কেনার পর পণ্যের মান নিয়ে অভিযোগ করেন। তাই ক্রেতাকেই অনলাইনে পণ্য কেনার আগে বিক্রেতার বিশ্বস্ততা ও পণ্যের যাচাই করতে হবে বলে মনে করেন এ তরুণ উদ্যোক্তারা।

এ ব্যাপারে কেনাকাটার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ‘শটকার্ট বাজার’র উদ্যোক্তা মো. আল মামুন জয়নিউজকে বলেন, আমরা মূলত ফেসবুকের মাধ্যমে পণ্যের অর্ডার নিই। সবসময় ভালো মানের পণ্যই অল্প লাভে আমরা ক্রেতাকে বিক্রি করি। কারণ বিশ্বস্ততা এ ব্যবসায়ের মূলধন। তাই ক্রেতাদের অনলাইনে কেনার আগে পণ্যের মান ও যার থেকে কিনছেন তার সর্ম্পকে যাচাই করে নিতে হবে।

জয়নিউজ/পিডি
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM