আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে এত মাতামাতি কেন?

নগরের কাজীর দেউড়ি আউটার স্টেডিয়ামসহ নগরের সকল খেলার মাঠ ও পার্ক দখলমুক্ত করে খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে মহানগর ছাত্রলীগ। সম্প্রতি এক মানববন্ধনে তারা এ দাবি জানান। তবে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি অংশ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করলেও ছাত্রলীগের বিরাট একটি অংশ এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেনি। মানববন্ধন সকল খেলার মাঠ উন্মুক্ত করার জন্য হলেও বক্তব্যে ছিল শুধু আউটার স্টেডিয়ামকে নিয়ে।

- Advertisement -

এদিকে জেলা ক্রীড়া সংস্থা বলছে, আউটার স্টেডিয়াম সকলের জন্য উন্মুক্ত। করোনাকালে দীর্ঘদিন খেলাধুলা বন্ধ থাকায় সেখানে পানি ও ঘাস জম্মেছে। তবে আউটার স্টেডিয়ামতো বন্ধ করে দেওয়া হয়নি কোনো সময়।

- Advertisement -google news follower

তাই প্রশ্ন উঠেছে, ছাত্রলীগ কি খেলার মাঠ উন্মুক্ত করার দাবি তুলেছে নাকি এই আন্দোলনের পেছনে অন্য কোনো রাজনৈতিক কারণ রয়েছে। এর আগেও আউটার স্টেডিয়াম এর পাশে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সুইমিংপুল নির্মাণেরও সময় বাধা দিয়েছিল ছাত্রলীগের এ অংশটি।

জয়নিউজের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, আগ্রাবাদ জাম্বুরি মাঠকে পার্কে পরিণত করেছে গণপূর্ত বিভাগ। সংস্কারবিহীনভাবে পড়ে আছে চট্টগ্রাম কলেজের প্যারেড মাঠ। আর বছরের প্রায় সময় মেলার দখলে থাকে পলোগ্রাউন্ড মাঠ। লালদিঘী মাঠ ভর্তি কার বা অন্য যানবাহনে। নির্মাণ সামগ্রী ও মেলায় অসহায় হালিশহরের আবাহনীর মাঠ। গাড়ি ও নির্মাণ সামগ্রীর স্ট্যান্ডে পরিণত জমিয়াতুল ফালাহ সংলগ্ন মাঠ। করোনার কারণে দীর্ঘদিন খেলাধুলা বন্ধ থাকায় আউটার স্টেডিয়ামে জমে আছে পানি, বেড়েছে ঘাস। তবে বিজয় মেলা ছাড়া কোনো সময় বন্ধ থাকে না এই আউটার স্টেডিয়াম।

- Advertisement -islamibank
আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে এত মাতামাতি কেন?
প্যারেড মাঠ

আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে কেন মাতামাতি

চট্টগ্রামের নগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে দুইটি বলয় দৃশ্যমান। একটি প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অন্যটি সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার অনুসারী নেতাকর্মীরা তাঁর(মহিউদ্দিন চৌধুরী) পুত্র শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে রাজনীতিতে পরিচিত। রাজনীতিতে মহিউদ্দিন-নাছিরের দ্বন্ধ বা প্রতিযোগিতা সেই অনেক আগে থেকে। মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পরও সেই দ্বন্ধ কমেনি। অনেকের মতে আরো বেড়েছে।

সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল আউটার স্টেডিয়ামের পাশে সুইমিংপুলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে নগর ছাত্রলীগের একটি অংশ। যারা ছিলেন প্রয়াত মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী। পরবর্তীতে সরকারের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সেখানে সুইমিংপুল নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে দৃষ্টিনন্দন সুইমিংপুল হিসেবে যেটি সারাদেশে পরিচিত হয়েছে।

আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে এত মাতামাতি কেন?
আউটার স্টেডিয়াম

সংশ্লিষ্টদের মতে, আউটার স্টেডিয়ামে ডিসেম্বর মাসে মুক্তিযুদ্ধের বিজয়মেলা করতেন মহিউদ্দিন চৌধুরী। সুইমিংপুলের কারণে আউটার স্টেডিয়ামের একটি অংশে স্থাপনা তৈরি হয়। ফলে মাঠের সামান্য অংশ কমে যাওয়ায় মেলা অনুষ্ঠিত হতে সমস্যার সম্মুখীন হয়। এনিয়ে দুই নেতার মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়। তখন মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতারা সুইমিংপুলের কাজে বাধা দেয়।

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার একাধিক কর্মকর্তা জয়নিউজকে বলেন, মাঠ নিয়ে রাজনীতি করার কি দরকার। শুধু আউটার স্টেডিয়ামকে লক্ষ্য করে কোনো কর্মসূচি করা বা কর্মসূচিতে শুধু আউটার স্টেডিয়ামকে নিয়ে কথা বলা মানববন্ধনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দিন শামীম জয়নিউজকে বলেন, আমরা নগর ছাত্রলীগের সাথে একমতপোষণ করে বলতে চাই, নগরের সকল মাঠ খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত করা হোক।তবে আউটার স্টেডিয়াম নিয়ে তাদের বক্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। কারন আউটার স্টেডিয়াম সব সময় খেলাধুলার জন্য উন্মুক্ত ছিল। করোনাকালে খেলাধুলা বন্ধ ছিল। তাই কিছুটা সংস্কার করতে হবে খেলার মাঠ। ইতিমধ্যে সিজেকেএস’র সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মাঠ সংস্কারের কাজ শুরু হচ্ছে। একটি প্রতিষ্ঠানকে সেটি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জয়নিউজ

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM