‘প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামের জামিন বৃহস্পতিবার (২০ মে) হয়ে যাবে, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এ আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন’ বলে জানিয়েছেন প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন।
মঙ্গলবার (১৮ মে) দুপুরে সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আনিসুল হক, রোজিনা ইসলামের বড় ভাই মো. সেলিমসহ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘আমরা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা করেছি। আমরা যেটা তাকে জানিয়েছি, গতকাল যে ঘটনাটি ঘটেছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে রোজিনাকে ছয় ঘণ্টা আটকে রাখা হয়েছে। তাকে নানা ধরনের হেনস্তা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চেয়েছি, এ ধরনের হেনস্তা করার অধিকার কারও নেই।’
‘এরা কারা, কী জন্য করেছে সেটার তদন্ত করে বিচার করতে হবে। ওনার জামিনের বিষয়ে বলেছি যেন জামিন হয়। সবচেয়ে বড় যেটা তিনি অসুস্থ, তাকে সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার বিষয়ে বলেছি। যেহেতু কারাগারে পাঠানো হয়েছে, আমরা জানি কারাগারের কী অবস্থা। তাকে যেন ভালো পরিবেশে রাখা হয়। তাকে যেন সেখানে নতুন করে কোনোভাবে হেনস্তা না করা হয়, সেটা যাতে নিশ্চিত করা হয়।
উনি (স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী) বলেছেন, ওনার সাধ্যমতো সেটি তিনি দেখবেন। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, বৃহস্পতিবার যে জামিন শুনানি হবে তার জামিন হয়ে যাবে। তিনি এটাও বলেছেন, আমরা চাই না সাংবাদিকদের সঙ্গে সরকারের কোনো ভুল বোঝাবুঝি হোক। সুন্দর ও সুষ্ঠু সমাধান আমরাও চাই।’
ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘তারা (স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়) যেহেতু মামলা করেছে রোজিনা ইসলাম কী অপরাধ করেছে সেটি আদালত দেখবে। কিন্তু তারা যে হেনস্তা করেছে সেটি করতে পারে কি-না তা তদন্ত করে দেখার জোরালো দাবি জানিয়েছি।’
এ সময় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, রোজিনা ইসলামকে ফিজিক্যালি টর্চার (নির্যাতন) করা হয়েছে। আমরা সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছি। তারা বলেছে, আধা ঘণ্টা পর পুলিশে দেওয়া হয়েছে, কিন্তু মূলত কয়েক ঘণ্টা তাকে ছোট একটি রুমে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।’
মানসিক ও শারীরিকভাবে তাকে বিভিন্ন ধরনের হেনস্তা করা হয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, ‘সেটির যাতে সুষ্ঠু তদন্ত হয়, সে বিষয়ে আমরা দাবি জানিয়েছি। আমরা বলেছি, রোজিনা ইসলামের নামে যে দুটি ধারায় মামলা করা হয়েছে, সেটি জামিনযোগ্য। সেখানে কিন্তু রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে চাওয়া হয়েছে। যাতে জামিন না হয়, সে জন্য এটা করেছেন।’
‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাদের আশ্বস্ত করে বলেছেন, আশা করি বৃহস্পতিবারের মধ্যে জামিন হয়ে যাবে। কোনো প্রকার ব্যত্যয় না করে বৃহস্পতিবারের মধ্যে যেন জামিন হয়, আমরা সে দাবি করেছি। এছাড়া রোজিনা যাতে সুবিচার পান সে বিষয়ে তারা সচেষ্ট থাকবেন।’
রোজিনার স্বাস্থ্য নিয়ে উৎকণ্ঠার মধ্যে আছেন বলে সাংবাদিকদের জানান তার বড় ভাই মো. সেলিম। তিনি বলেন, ‘আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করলাম। তিনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, রোজিনার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে। আমরা সেই আশার ওপর আস্থা রেখে এগিয়ে যেতে চাই।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘দোয়া করবেন, আমার বোন যাতে সুস্থ থাকে, আবার আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে।’