কক্সবাজারে দুই দিনে ২০ জনের প্রাণহানি

দু’দিনের টানা বর্ষণে তলিয়ে গেছে কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলার নিম্নাঞ্চল। ভারী বৃষ্টিতে পাহাড় ধসে ৫ রোহিঙ্গাসহ মারা গেছে ১২ জন। পাহাড়ি ঢলের পানিতে ভেসে গিয়ে প্রাণ গেছে এক রোহিঙ্গা শিশুসহ ৮ জনের। হঠাৎ সৃষ্ট এ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ২ দিনেই ২০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে।

- Advertisement -

মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল থেকে বুধবার (২৮ জুলাই) সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার উখিয়া, টেকনাফ, মহেশখালী ও ঈদগাঁও উপজেলায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।

- Advertisement -google news follower

এদিকে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে জেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা জানান, গেল ৩ বছরে এত বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখেনি কক্সবাজারের মানুষ।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পাহাড় ধসে মঙ্গলবার সকালে উখিয়ার বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর জি-৩৭ ব্লকের শাহ আলমের স্ত্রী দিল বাহার (৪২), তার শিশু সন্তান শফিউল আলম (৯), জি-৩৮ ব্লকের মোহাম্মদ ইউসূফের স্ত্রী গুল বাহার (২৫), তার আড়াই মাসের শিশু সন্তান আব্দুর রহমান ও আয়েশা সিদ্দীকার (১) মৃত্যু হয়।

- Advertisement -islamibank

অন্যদিকে পৃথক পাহাড় ধসে টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের বিলিজারপাড়ায় মাটির নিচে চাপা পড়ে একই পরিবারের ৫ সদস্যের মৃত্যু হয়। হোয়াইক্যংয়ের পাহাড় ধসের পর আরও এক বৃদ্ধের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। একই দিন মহেশখালী উপজেলার সিপাহী পাড়ায় মোর্শেদা বেগম নামে এক কিশোরীও মারা যায়।

পানিতে ভেসে গিয়ে ৮ জনের মৃত্যু
মঙ্গলবার সকালে বালুখালী ১০নং ক্যাম্পে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে এক রোহিঙ্গা শিশুর মৃত্যু হয়। একইদিন বিকেলে মহেশখালী উপকূল থেকে ভাসমান অবস্থায় এক জেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বুধবার সকালে মাছ ধরতে গিয়ে কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলায় দরগাহ পাড়া খালে নিখোঁজের পর বিকেলে তিন কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

তারা হলেন— মোহাম্মদ শাহাজাহান (১৪), আব্দুল্লাহ (১৫) ও ফারুক (১৩) । এছাড়া সন্ধ্যায় উখিয়া উপজেলার রাজাপালং থেকে দুইজন ও পালংখালী ইউনিয়ন থেকে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। যারা ২৪ ঘণ্টা ধরে পাহাড়ি ঢলে ভেসে গিয়ে নিখোঁজ ছিল।

বিষয়টি নিশ্চিত করে রামু ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার সোমেন বড়ুয়া বলেন, বুধবার সকালে দরগাহ পাড়া খালে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হয় তিন কিশোর। সেখান থেকে দীর্ঘ চেষ্টার পর ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরী দল তাদের মরদেহ উদ্ধার করে।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) পারভেজ চৌধুরী বলেন, একই পরিবারের ৫ জনসহ পাহাড় ধসে প্রাণ গেছে ৬ জনের। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঝুকিপূর্ণ পাহাড়ে বসবাসরতদের সরিয়ে আনা হচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে উপজেলার ৭ শতাধিক মানুষ।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, পাহাড়ি ঢলে ভেসে যাওয়া তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। রাজাপালং-এ দুইজন ও পালংখালীতে একজনের মরদেহ পাওয়া গেছে। পরিচয় নিশ্চিত হয়ে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ বলেন, গেল ২৪ ঘণ্টায় কক্সবাজারে প্রাণ গেছে ২০ জনের। বন্যা দুর্গত এলাকার মানুষের জন্য ১৫০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ, ৫ লাখ নগদ অর্থ এবং নিহত সবাইকে ২৫ হাজার টাকা করে নগদ অর্থ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরতদের সরিয়ে আনতে জেলা প্রশাসনের একাধিক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে অভিযান চলছে।

তিনি আরও জানান, এখন পর্যন্ত জেলার ৬০ হাজার মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে আনা হয়েছে। তাদের সেখানে খাবার সরবারহ করা হচ্ছে।

জয়নিউজ/এসআই
KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM