নগরের কর্ণফুলী নদীর পাড়কে অবৈধ দখলদারমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। প্রথমদিনের অভিযানে প্রায় ৪ একর পরিধির প্রায় এক কিলোমিটার জমি দখলদারদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শুরু হওয়া এই অভিযান চলে একটানা সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান মুক্ত ও তৌহিদুর রহমান এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন।
অভিযান শেষে তাহমিলুর রহমান জয়নিউজকে জানান, নদীর পাড়ে প্রায় এক কিলোমিটার জায়গা উদ্ধার করা হয়েছে। জমির হিসেবে যা প্রায় চার একর। এছাড়াও অভিযানে নদীর পাড় দখল করে গড়ে তোলা ৫০টির মতো অবৈধ স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া আরও ২০টি অবৈধ স্থাপনা দখলদাররা নিজেরাই সরিয়ে নিয়েছেন।
অভিযান মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে আবারও শুরু হবে বলে জানিয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেট তাহমিলুর রহমান।
তিনি বলেন, তিন পর্বে পতেঙ্গা থেকে মোহরা পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলবে। প্রথম পর্বে সদরঘাট থেকে বারেক বিল্ডিং, দ্বিতীয় পর্বে সদরঘাট জেটি থেকে মোহরা এবং তৃতীয় পর্বে বন্দর থেকে মোহরা পর্যন্ত অভিযান চলবে।
তিনি আরো জানান, এ অভিযানের মাধ্যমে প্রায় ১০ একর জায়গা উদ্ধার করা হবে। ভূমিমন্ত্রীর সহযোগিতায় এই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে সাধারণ মানুষও যথেষ্ট সহযোগিতা করছেন।
ম্যাজিস্ট্রেট তৌহিদুল ইসলাম জয়নিউজকে বলেন, মাঝিরঘাট এলাকায় অভিযানের সময় আশরাফ নামে এক ব্যক্তি এসে জায়গার মালিকানা দাবি করে। পরে এসি ল্যান্ড কাগজ যাচাই-বাছাই করলে তার দাবি ভুয়া প্রমাণিত হয়। আশরাফকে ভুয়া কাগজের দায়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উচ্ছেদ অভিযানে জেলা প্রশাসনকে সহযোগিতা করে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন, সিডিএ, ফায়ার সার্ভিস, কর্ণফুলী গ্যাস কর্তৃপক্ষ, বিআইডব্লিউটিএ, র্যাব ও পুলিশ। এছাড়া জেলা প্রশাসনের নিযুক্ত ১০০ জন শ্রমিক উচ্ছেদ অভিযানে কাজ করেন।
প্রসঙ্গত, হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৫ সালের জরিপে কর্ণফুলী নদীর দুই পাড়ে ২ হাজার ১৮১টি অবৈধ স্থাপনা চিহ্নিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। গত তিন বছরে স্থাপনা আরও বেড়েছে বলে ধারণা জেলা প্রশাসনের।
সিএমপির অতিরিক্ত উপ কমিশনার (দক্ষিণ) আবদুর রউফ জয়নিউজকে বলেন, সিএমপির ২০০ জন পুলিশ সদস্য অভিযানে অংশ নেন। অনেকে নিজ দায়িত্বে স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এর আগে সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল সোয়া ১০টা থেকে কর্ণফুলী নদীর তীরে সদরঘাট লাইটারেজ জেটি থেকে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে জেলা প্রশাসন। প্রথম ধাপে নগরের সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত এলাকা দখলমুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।