আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কক্সবাজার জেলার ৮ উপজেলার আওয়ামী লীগের নেতারা এখন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে পড়েছেন।
৩১ জানুয়ারির মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানদের একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। এরপর সেই তালিকা পাঠাতে হবে জেলা আওয়ামী লীগ বরাবর। তালিকায় একটি পদের বিপরীতে ৩ জনের বেশি মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম অন্তর্ভুক্ত রাখা যাবে না। কিন্তু কাকে রেখে কাকে বাদ দেবেন। তা নিয়ে উপজেলা নেতাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।
প্রার্থী নির্বাচনে সবচেয়ে বড় সমস্যা কয়েকজন প্রভাবশালী নেতা। তাঁদের মধ্যে কয়েকজন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা। কয়েকজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি এবং সংসদ-সদস্যের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত। কুতুবদিয়ায় অ্যাডভোকেট ফরিদুল ইসলাম চৌধুরী, চকরিয়ায় রেজাউল করিম, টেকনাফে জাফর আহমদ, রামুতে রিয়াজুল আলমের মতো নেতারা উপজেলা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন না। ফলে উপজেলা আওয়ামী লীগ থেকে প্রেরিত প্রাথমিক তালিকায় তাঁদের নাম না থাকার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। যদিও উল্লেখিতদের মধ্যে দুই জন সাবেক এবং দুই জন বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান।
এই পরিস্থিতির মধ্যেই বর্ধিত সভা আহ্বান করতে চলেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ। ২৮ জানুয়ারি নির্ধারণ করা হয়েছে কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা। অন্য উপজেলাগুলোও ৩১ জানুয়ারির মধ্যে সম্পন্ন করতে চাইছে বর্ধিত সভা। যদিও এসব সভায় একক প্রার্থী নির্বাচনের কোন সম্ভাবনা দেখছেন না খোদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহামুদুল করিম মাদু বলেন, তিন জনের নাম প্রেরণ করা খুব কঠিন। তারপরও দলীয় নেতাদের মতামতের ভিত্তিতে তিনজনের নাম পাঠানোর চেষ্টা করবো আমরা। যদি তা সম্ভব না হয় কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের উপর এর দায়িত্ব ছেড়ে দেবো।
পেকুয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম বলেন, ৩১ জানুয়ারির মধ্যেই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভা আহ্বান করবো। ওই সভায় উপজেলা,ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতাদের মতামত নেয়া হবে। সেই মতামতের ভিত্তিতে একটি তালিকা আমরা জেলা আওয়ামী লীগের কাছে প্রেরণ করবো।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাচন সংক্রান্ত একটি চিঠি প্রেরণ করে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বাক্ষরিত ওই পত্রে প্রার্থী নির্বাচনের প্রাথমিক দায়িত্ব উপজেলা আওয়ামী লীগের হাতে অর্পণ করা হয়। ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতি পদের বিপরীতে ১ জনের নাম প্রেরণের উপর গুরুত্বারোপ করা হলেও তা সম্ভব না হলে সর্বোচ্চ তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর নাম প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করা হয়। চিঠিটিতে স্মরণ করিয়ে দেয়া হয়, উপজেলা নির্বাচনে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটি নির্ধারিত স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ডের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।