তাদের দাবি তারা নিজেদের নেতাকেই দলের প্রার্থী হিসেবে চান। সেই নেতা, যিনি চলতি সংসদেই দাপটের সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সমস্যা হল- এবার দলের মনোনয়নপ্রাপ্তদের তালিকায় তাঁর ঠাঁই হয়নি। তাই তাঁর কর্মীরা দল বেঁধে রাজপথে নেমে পড়েছেন প্রতিবাদ জানাতে। এটুকু পর্যন্ত ঠিকই ছিল। তাদের এই ‘আন্দোলন’ হয়তো খুব একটা সাড়াও ফেলতো না। যদি না তারা প্রতিবাদের জন্য বেছে নিতেন বিচিত্র এক মাধ্যম। কক্সবাজারের আলোচিত ওই সাংসদের নেতা অন্তঃপ্রাণ শিষ্যরা রোববার শুরু করেছেন ব্যতিক্রমী ‘কলা গাছ আন্দোলন’! তা, কেমন ছিল সেই আন্দোলন? প্রশ্ন জাগছে নিশ্চয়ই। আসুন সেটা জেনে নিই জয়নিউজের দুই প্রতিনিধির ভাষ্যেই
কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনটি মহাজোটের শরিক দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দিচ্ছে আওয়ামী লীগ। এই আসনে মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে লড়বেন জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন বাবলু। এ কারণে বাদ পড়েছেন এই আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল।
কমলকে মনোনয়ন না দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় রোববার (২৫ নভেম্বর) দুপুর থেকে সদর ও রামু উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় আন্দোলন শুরু করেছেন তাঁর সমর্থকেরা। বিভিন্ন জায়গায় ব্যতিক্রমী ‘কলাগাছ’ আন্দোলনও গড়ে তুলেছেন তারা।
এ দিন দুপুরে সদরের ঈদগাঁও স্টেশনে সড়কের দুইপাশে কলাগাছ রোপণ করে আন্দোলন শুরু করে কমলপন্থী নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা। প্রায় দুই শতাধিক কলাগাছ রোপণ করে প্রতিবাদ জানায় আন্দোলনকারীরা। তারা জাতীয় পার্টির ‘বহিরাগত’ প্রার্থীকে এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে।একই সময়ে রামুতে বিক্ষোভ মিছিল করেন কমল সমর্থকেরা। এতে নেতৃত্ব দেন কমলের আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত রামু উপজেলা চেয়ারম্যান রিয়াজুল আলম, জেলা পরিষদের সদস্য ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শামসুল আলম, রামু উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নীতিশ বড়ুয়া, ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টু, ঈদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ ভুট্টু প্রমুখ।
বিক্ষোভ মিছিল থেকে তারা বলেন, কমলকে ছাড়া অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে মেনে নেওয়া হবে না। এই আসনে কমলের বিকল্প নেই। তাই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের দাবি জানান তারা।
২০১৪ সালের নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন সাইমুম সরওয়ার কমল। তবে গত ৫ বছরে অনেক বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন এই সাংসদ।
সর্বশেষ কয়েকদিন আগে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জিএম রহিমুল্লাহ’র জানাজায় তাঁর পরিবারের জন্য একটি জমি বরাদ্দ এবং জিএম রহিমুল্লাহ’র নামে একটি সড়কের নামকরণের ঘোষণা দেন সাংসদ কমল। একজন জামায়াত নেতার নামে সড়কের নামাকরণের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই তুমুল সমালোচনার ঝড় ওঠে কমলের বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত এই বিতর্কই কাল হলো এমপি কমলের।