চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, নগরের বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত প্রস্তাবিত খাল খননে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা অধিগ্রহণকৃত জমির মৌজা মূল্যের ৩ গুণ ক্ষতিপূরণ পাবেন।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে করপোরেশনের কে বি আবদুচ সাত্তার মিলনায়তনে বহদ্দারহাট বারইপাড়া থেকে কর্ণফুলী নদী পর্যন্ত প্রস্তাবিত খাল খনন প্রকল্পের এলাইনমেন্টের পূর্ব বাকলিয়া এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৯৫ সালের ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যানের অনুসরণে প্রকল্পের সম্পূর্ণ জমি অধিগ্রহণ করে নতুন প্রস্তাবনার আলোকে এই খাল খনন করা হবে। এজন্য ২৫ একর জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকরা মৌজা মূল্যের ৩ গুণ ক্ষতিপূরণ পাবেন।
এই খাল খনন প্রকল্পের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করা হয়েছিল উল্লেখ করে মেয়র বলেন, এই প্রকল্পের মূল ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩২৬ কোটি ৮৪ লাখ ৮১ হাজার টাকা। সংশোধিত প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২শ’ ৫৬ কোটি ১৫ লাখ ৫৬ হাজার টাকা। আগামী বছরের ৩০ জুনের মধ্যে এই খাল খনন প্রকল্পের কাজ শেষ করা হবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
মেয়র নাছির জানান, সংশোধিত প্রকল্পটি ২০১৮ এর ৭ নভেম্বর একনেকে অনুমোদন পায়। একনেকের সভায় প্রধানমন্ত্রী নান্দনিক দিক বিবেচনায় খালের দুইপাশে প্রয়োজনীয় বাড়তি জায়গা অধিগ্রহণ করে ওয়াকওয়ে নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন। ২.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ ৬৫ ফুট প্রশস্ত এই নতুন খাল খনন প্রকল্পে খালের দুই পাশে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ করা হবে। এর দুই পাশে ২০ ফুট করে সড়ক এবং ৬ ফুট করে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হবে।
মেয়র বাকলিয়াবাসী নিজেদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে নতুন এই খাল খননে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবেন বলে আশা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, খাল খননের জন্য যে সব ভূমি মালিকের ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে তাদের টাকা যথাযথ প্রক্রিয়ায় পরিশোধ করা হবে। এক্ষেত্রে এক চুল পরিমাণ অনিয়মের কোন সুযোগ থাকবে না। কোন ভূমি মালিকের কোন ভবন যদি প্রকল্পের প্রস্তাবিত এলাইনন্টের মধ্যে পড়ে, তবে তাদেরকে গণপূর্ত অধিদপ্তরের নিয়মানুসারে ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হবে। এসময় মেয়র ডিজিটাল সার্ভের মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন।
মেয়র বলেন, আমি যা বলি, তা করি। তাই ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকদের আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নাই। আপনারা অবশ্যই আপনাদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাবেন। ক্ষতিপূরণের টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
এসময় ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের বেশ কয়েকজন তাদের বিভিন্ন আশংকার কথা মেয়রের কাছে তুলে ধরেন। তাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন ভূমি মালিক বলেন, যে সব ভূমি মালিকের পুরো ভূমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়বে তাদের বিষয়টি বিশেষভাবে বিবেচনা করে তাদের কিভাবে পুনর্বাসন করা যায়, তা ভেবে দেখতে মেয়রকে অনুরোধ করেন।
সভায় উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হারুনুর রশিদ, সংরক্ষিত ওর্য়াডের কাউন্সিলর ফারজানা পারভীন, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা আবু সাহেদ চৌধুরী, প্রধান প্রকৌশলী লেঃ কর্নেল মহিউদ্দীন আহমদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম, এস্টেট অফিসার এখলাছুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। মতবিনিময় সভায় পূর্ব বাকলিয়া এলাকার প্রায় শতাধিক ভূমি মালিক উপস্থিত ছিলেন।
জয়নিউজ/হিমেল/জুলফিকার