৭ মাস বয়সী আবদুল্লাহ বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) জ্বরে আক্রান্ত হয়। জ্বরের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে তার মাথায় পানি এসে মাথার উপরের দিকটা ফুলে যায়। ওইদিনই তাকে ভর্তি করা হয় আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে।
১১ মাস বয়সী প্রজ্ঞা পারমিতা ৯ দিন আগে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। হাসপাতালে ভর্তি করানোর পর অবস্থা একটু ভালো হলে চিকিৎসকরা তাকে বাড়ি নিয়ে যেতে বলেন। তবে বাড়ি ফিরেই আবারো বমি শুরু হয় প্রজ্ঞার। শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) রাতে পুনরায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় তাকে।
চট্টগ্রামে গত কয়েক সপ্তাহের প্রচণ্ড দাবদাহ ও ভ্যাপসা গরমে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, জ্বরসহ নানা রোগে। ফলে হাসপাতালগুলোর শিশু ওয়ার্ডে এখন রোগীর চাপ। চিকিৎসকরা বলছেন, এ সময় শিশুদের খাবার-দাবার, পোশাক-আশাক প্রভৃতি বিষয়ে অভিভাবকদের সজাগ থাকতে হবে।
শনিবার (২০ এপ্রিল) বিকালে নগরের আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, শিশুদের ডায়রিয়া এবং সাধারণ ওয়ার্ডে কোনো শয্যা খালি নেই। ওয়ার্ডে ধারণক্ষমতার অধিক রোগী থাকায় সবাইকে শয্যা দেওয়া যায়নি। সাধারণ ওয়ার্ডে ১৪ শয্যার সবগুলোই ছিল পূর্ণ। ৩টি শিশুকে সেজন্য রাখা হয়েছে বারান্দায়।
সাধারণ ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন শিশু আবদুল্লাহর মা রোকেয়া বেগম জানান, বৃহস্পতিবার থেকে ছেলেকে নিয়ে তিনি হাসপাতালে আছেন। তীব্র জ্বরে ছেলের মাথায় পানি চলে আসে। চিকিৎসকরা ওষুধ দিয়ে ফোলা কমিয়েছেন। তবে বাচ্চা কোনো খাবার খেতে পারছে না। তাই স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমি গার্মেন্টসকর্মী। আমার স্বামী দিনমজুর। ছেলের অসুস্থতার জন্য কাজে যেতে পারছি না। আবার ছেলেকে দেখবে তেমন কেউও নেই। কি যে হবে বুঝতে পারছি না।’
এদিকে, হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা বেড়ে গেলেও চিকিৎসক ও নার্সরা আন্তরিকতার সঙ্গে তাদের চিকিৎসা দিচ্ছেন। এ সময়ে শিশুদের কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে সেটাও বলে দিচ্ছেন অভিভাবকদের।
হাসপাতালের শিশু বিভাগের নির্বাহী পরিচালক ডা. আবু সাঈদ জয়নিউজকে বলেন, গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হয়। তবে এ সময় ডায়রিয়ার প্রকোপ থাকে বেশি।
তিনি বলেন, এ সময় শিশুদের ঢিলেঢালা পোশাক পরাতে হবে। রোদে নিয়ে যাওয়া যাবে না। বেশি করে তরল জাতীয় খাবার খাওয়াতে হবে। পরিমিত বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া ডায়রিয়া বা জ্বর হলে উৎকণ্ঠিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
জয়নিউজ/আরসি