কখনো মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলা, বৃক্ষমেলা, তাঁত বস্ত্রমেলা, আবার কখনো গাড়ি মেলার আয়োজন করা হতো এখানে। কখনো বাঁশ, কখনো পিকআপ-মিনিট্রাক, কখনো ভ্যানগাড়ির দখলে থাকত এলাকাটি। রাখা হতো ব্যবসার টাইলস। এসবের পাশেই ফুটপাতজুড়ে আবর্জনার স্তূপ। ফুটপাত থেকে সে আবর্জনা ছড়িয়ে পড়ত মূল সড়কে। নাক চেপে হাঁটাও দায় ছিল পথচারীদের। আউটার স্টেডিয়াম এলাকার এ চিত্র চির পরিচিত ছিল নগরবাসীর কাছে।
আগে কখনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এখানে। আ জ ম নাছির উদ্দীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়রের দায়িত্ব নেওয়ার পর উন্নয়নের পরশ পায় আউটার স্টেডিয়াম । চসিক আউটার স্টেডিয়ামকে ঘিরে নেয় উন্নয়নের মহাপরিকল্পনা। পরিবর্তনের প্রয়াস পায় স্টেডিয়ামের চারপাশে। চসিকের তত্ত্বাবধানে বেসরকারি একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে তৈরি হয় সৌন্দর্যবর্ধনের নকশা।
আউটার স্টেডিয়ামের ভিতরে আগে ড্রেন ব্যবস্থা ছিল না। বর্তমানে ড্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। পথচারীদর হাঁটা-চলা নির্বিঘ্ন করতে দখলমুক্ত করা হয়েছে ফুটপাত। তৈরি হচ্ছে নান্দনিক ও দৃষ্টিনন্দন ফুটপাত। নির্মিত হবে বাগান ও হাঁটার পথ। ইতোমধ্যে তুলে দেওয়া হয়েছে পিকআপ, ভ্যান, মিনিট্রাকের অস্থায়ী স্ট্যান্ড। নিষিদ্ধ করা হয়েছে আবর্জনা ফেলা।
চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু শাহাদাত মো. তৈয়ব জয়নিউজকে বলেন, আউটার স্টেডিয়ামের উত্তর ও পূর্বপাশের ৮০০ ফুট দীর্ঘ ফুটপাতের উন্নয়ন ও সৌন্দর্যবর্ধন করা হচ্ছে। ২৪ ফুট প্রস্থের ফুটপাতকে আট ফুট করে তিন লেনে ভাগ করা হচ্ছে। প্রথম ও তৃতীয় লেনে হাঁটার পথ থাকবে এবং মাঝখানের লেনে বাগান করা হবে। তৈরি করা হবে পুরুষ ও মহিলাদের জন্য আলাদা গণশৌচাগার। থাকবে দর্শনার্থী ও পথচারীদের বসার ব্যবস্থা। এসব কাজে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয় হবে।
জানা যায়, এ ব্যাপারে গত ২৪ সেপ্টেম্বর চসিকের সঙ্গে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান ফিউশন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের চুক্তি স্বাক্ষর হয়। ১৫ বছর মেয়াদি চুক্তির শর্তানুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান প্রকল্প এলাকায় ক্যাফে, এটিএম বুথ, যাত্রীছাউনি নির্মাণ করবে। তবে এসব কাজ করার সময় সরকারি সম্পদের কোনো ক্ষতি করা যাবে না। প্রকল্প এলাকা সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। ডিসেম্বরে আউটার স্টেডিয়াম এলাকার চারপাশের সৌন্দর্য দেখতে পাবে নগরবাসী।
এছাড়া আউটার স্টেডিয়ামের একপাশে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে সুইমিংপুল কমপ্লেক্স। বর্তমানে এই প্রকল্পের কাজ শেষ পর্যায়ে। ডিসেম্বরের মধ্যেই আন্তর্জাতিক মানের সুইমিংপুল পেতে যাচ্ছে নগরবাসী। আগে নগরে কোথাও সুইমিংপুল ছিল না। চট্টগ্রাম জেলা ক্রীড়া সংস্থার (সিজিকেএস) তত্ত্বাবধানে নির্মিত হচ্ছে এই কমপ্লেক্স। সাঁতার প্রতিযোগিতার পাশাপাশি এই সুইমিংপুলে কিশোর-কিশোরীরা সাঁতার শিখতে পারবে।