আসছে বর্ষাকাল। চট্টগ্রামবাসীর আগাম আতঙ্কের নাম জলাবদ্ধতা। জলাবদ্ধতায় নগরবাসীর অভিযোগের তির থাকে সিটি মেয়রের দিকে। কিন্তু চট্টগ্রামে নতুন দায়িত্ব নিয়েই বৃহস্পতিবার চউকের চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ শোনালেন আশার বাণী। বিস্তারিত পড়ুন জয়নিউজের স্টাফ রিপোর্টার কাউছার খান’র বিশেষ স্পট নিউজ
চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছিরের সঙ্গে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষের প্রথম সভাতেই চমক এসেছে। বৈঠকটি প্রথম সৌজন্য সাক্ষাত হলেও নগরবাসীকে দোভাষ দিলেন আশ্বাস। তিনি বলেন, চসিক-চউক একসঙ্গে কাজ করবে, আসুন নগর বাঁচাই। জলাবদ্ধতা ঠেকাই। নাছির ভাইয়ের সঙ্গে আছি আমরা।
মেয়র ও সিডিএ চেয়ারম্যানের মুখোমুখি বসে নগরবাসীকে রক্ষার আশ্বাসের সঙ্গে ছিল আশাবাদ- ‘এবছর প্রকৃতি বৈরী না হলে জলাবদ্ধতায় নগরবাসীকে ভুগতে হবে না’।
ঘরপোড়া গরুর মতো জলাবদ্ধতার ভোগান্তি যেন নগরবাসীর কাছে সিঁদুরে মেঘ। তাই নগরবাসীর দাবি- সঠিক পরিকল্পনা ও সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া হোক। সিডিএ চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ছিল নগরপিতার প্রথম সৌজন্য সাক্ষাৎ।
বৃহস্পতিবার (৯ মে) নগরের উন্নয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের সঙ্গে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষের বৈঠক হয় দুপুর দুইটায় চউক’র সম্মেলনকক্ষে।
বৈঠকে সিটি মেয়র আজম নাছির বলেন, আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রকৃতি বেশি বৈরী না হলে নগরবাসীর আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। নগর উন্নয়নে চউক আর চসিক একসঙ্গে কাজ করবে। এখন সিডিএ’র প্রকল্প বাস্তবায়নে মাঠে আছে সেনাবাহিনী।
তিনি আরো বলেন, এই জলাবদ্ধতা এক দিনে তৈরি হয়নি। অপরিকল্পিত নগরায়ণ, খাল, নালা-নর্দমা দখল করে স্থাপনা তৈরির কারণে ধীরে ধীরে এ সমস্যা প্রকট হয়েছে। এ সমস্যা নিরসনে জন্য সময়ের প্রয়োজন।
সিডিএ’র নতুন চেয়ারম্যান এম. জহিরুল আলম দোভাষ অবশ্য মেয়রের কোর্টে বল ঠেলে দিয়ে বলেছেন- জলাবদ্ধতা নিরসনের কাজ সিটি করপোরেশনেরও। এতে চউকের সহযোগিতা দরকার। আমি মেয়র মহোদয়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করব।
বৈঠকে উপস্থিত একাধিক জনপ্রতিনিধি জয়নিউজকে বলেন, নগরবাসীর মধ্যে এই বৈঠক নিয়ে আশা তৈরি হবে। জলাবদ্ধতা একটি অভিশাপ। পরিকল্পিত উপায়ে এই দুর্যোগ থেকে নগরবাসীর মুক্তি দরকার।
প্রসঙ্গত, চট্টগ্রাম নগর উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৯৯২ সালে তিনটি নতুন এবং ১৫টি শাখা খাল খননের সুপারিশ করেছিল। কিন্তু এতবছরেও সেই সুপারিশ বাস্তবায়িত হয়নি। ১৯৯২ সালের পর চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের অনেকগুলোর বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু জলাবদ্ধতার সমস্যা থেকেই গেছে।
এতে উপস্থিত ছিলেন চউক বোর্ড সদস্য কাউন্সিলর হাসান মুরাদ বিপ্লব, গিয়াস উদ্দিন, চসিকের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল মহিউদ্দিন আহমেদ, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবু সালেহ, আনোয়ার হোসেন, নির্বাহী প্রকৌশলী জসিম উদ্দিন, চউক সচিব তাহেরা ফেরদৌস বেগম, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন সামস, প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ শাহিনুর ইসলাম খান ও উপ সচিব কমল গুহ।