পথনাটকের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে সরকারের যাবতীয় উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, সমৃদ্ধি-অর্জন। দেশাত্মবোধক গানের তালে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায়। সঙ্গে ছিল বাঙালি ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন স্মৃতি চিহ্ন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রঙ-তুলিতে আঁকা ছবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন। সুসজ্জিত পাঁচটি ট্রাকে এ আয়োজন নিয়ে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার প্রায় সব’কটি উপজেলায় হাজির হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
বিজয়ের মাসে এ আয়োজনের নাম দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি ‘বিজয়ের গৌরবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ আয়োজনে অংশ নেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক। ২০ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া এ রোড-শোতে চট্টগ্রাম নগর ও জেলার ৫০টি স্পটে সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে নাচ-গান ও পথনাটকের আয়োজন করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, বাংলাদেশের গত দশ বছরে যে উন্নয়ন, সমৃদ্ধি আর অর্জন তা বিশ্বের কাছে এক বিস্ময়। বিশ্ব রাজনীতির প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বরা স্বীকার করেছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এ দেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। মুক্তিযুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে পিছিয়ে দেওয়া হয়েছিল। গত ১০ বছরে তার চেয়ে বহুগুণ এগিয়েছে দেশ।
তিনি বলেন, লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, বিদেশি সম্মাননা, স্বীকৃতি অর্জন ও সুশাসনের মাধ্যমে বাংলাদেশ আজ উন্নত বিশ্বের প্রতিনিধিত্ব করার অপেক্ষায়। বিজয়ের মাসে এ অঞ্চলের মানুষের কাছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় অর্জন ও সমৃদ্ধির এ বার্তাকে পৌঁছে দেওয়াকে দায়িত্ব মনে করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত, চারুকলা ও নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন প্রস্তুতি নিয়ে এ আয়োজনটি সফল করেছে। সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, প্রক্টরিয়াল বডি, প্রভোস্ট কমিটির সদস্যবৃন্দ, বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু পরিষদ, শিক্ষক-শিক্ষিকাবৃন্দ এবং সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচিকে সফল করেছে।
জানা গেছে, ২০ ডিসেম্বর ‘বিজয়ের গৌরবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক কর্মসূচি উদ্বোধন হয় কোতোয়ালী থানা এলাকায় পথনাটক ও গান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। এরপর থেকে ১৫০ জনের এ সাংস্কৃতিক দলটি দেওয়ানহাট, বারেক বিল্ডিং, অলংকার, প্রেস ক্লাব, শহীদ মিনার, সিআরবিসহ প্রায় অর্ধশত স্থানে পথনাটক ও গান পরিবেশন করে।
এছাড়া জেলার পটিয়া, চন্দনাইশ, রাঙ্গুনিয়া, হাটহাজারী, রাউজান, মিরসরাই, সীতাকুণ্ড উপজেলায় গান, নাচ, পথনাটক, আবৃত্তি’র মাধ্যমে সরকারের উন্নয়ন চিত্র উপস্থাপন করে তারা। প্রতিটি অনুষ্ঠানের আগে সংক্ষিপ্ত সভাও অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশের উন্নয়নের নানা তথ্য উপস্থাপন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপস্থাপনায় উঠে আসে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, ছিটমহল সমস্যার সমাধান, সমুদ্রবিজয়, মাধ্যমিক পর্যায়ে বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণ, স্বাক্ষরতার হার বৃদ্ধি, বিদ্যুতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে উন্নয়ন, খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা, কওমী মাদ্রাসার স্বীকৃতি, পোশাক রফতানিতে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থান অর্জন, নারীর ক্ষমতায়ন, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেলসহ সরকারের উন্নয়ন অর্জনের নানা দিক।