পরিবহন শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে সোমবার (২৯ অক্টোবর) রাস্তায় কোনো গণপরিবহন চলছে না । ফলে অফিসগামী মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা পড়ে বিপাকে। তার ওপর সকাল থেকে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি এ দুর্ভোগের মাত্রা দ্বিগুণ করেছে।
সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংস্কারসহ ৮ দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকদের ৪৮ ঘণ্টার ধর্মঘটের দ্বিতীয় দিনে চট্টগ্রাম নগরে যাত্রীবাহী বাস ও পণ্যবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা যায়, শাহ আমানত সেতু, কাপ্তাই রাস্তার মাথা, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, জিইসি, ইস্পাহানি, অলংকার মোড়, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট ও বাদামতলী এলাকা থেকে দূরপাল্লার বাস ছাড়েনি। সাধারণ মানুষ গাড়ির অপেক্ষায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছেন। গাড়ি না পেয়ে অনেকেই হেঁটে কিংবা রিকশা করে কর্মস্থলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। বৃষ্টির কারণে মানুষের ভোগান্তি আরো বেড়েছে। তবুও গন্তব্যে পৌঁছাতে মানুষ ছুটেছেন।
আন্দরকিল্লা মোড়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী মো. শোয়াইব জয়নিউজকে জানান, শাহ আমানত সেতু যাব। অনেকক্ষণ অপেক্ষা করেও কোনো গাড়ি পাইনি। সেইসঙ্গে বৃষ্টি হচ্ছে। রাস্তাঘাটের বেহাল দশা। ভোগান্তি বেড়েছে।
এই সুযোগে সড়কে চলাচলকারী রিকশা-অটোরিকশাগুলো যাত্রীদের কাছ থেকে স্বাভাবিকের চাইতে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছে। নগরের চকবাজার থেকে আগ্রাবাদ এলাকায় সাধারণত ৮০ থেকে ১০০ টাকায় অটোরিকশায় যাতায়াত করা গেলেও যাত্রীদের কাছে এর দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছে চালকরা।
এদিকে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জয়নিউজকে জানান, ধর্মঘটের কারণে ট্রেনগুলোতে অস্বাভাবিক যাত্রীর চাপ বেড়েছে। বিভিন্ন রুটে সব ট্রেন নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন পূর্বাঞ্চলের সভাপতি মৃণাল চৌধুরী জয়নিউজকে জানান, নতুন সড়ক পরিবহন আইনের কয়েকটি ধারা সংশোধনের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করছে শ্রমিকরা। তিনি বলেন, আট দফা দাবিতে পরিবহন শ্রমিকরা সড়কে গাড়ি বের করেনি। তাদের দাবি যৌক্তিক।
উল্লেখ্য, গত ২৯ জুলাই বেপরোয়া বাসের চাপায় রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর পর আন্দোলনে নামে ছাত্রছাত্রীরা। নিরাপদ সড়ক দাবিতে বহুল আলোচিত এ আন্দোলন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলন চলাকালে সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় সরকার। বহুল আলোচিত এই আইনের খসড়া এর আগে আট বছর ধরে ঝুলেছিল। গত ১৯ সেপ্টেম্বর আইনটি সংসদে পাস হয়।
জয়নিউজ/ আরসি