নগরের বিভিন্ন স্থানে রাস্তা পার হওয়ার জন্য রয়েছে ফুটওভারব্রিজ। তবে পথচারীরা সেগুলো ব্যবহার না করে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে পার হন। এ কারণে নিয়মিত ঘটছে দুর্ঘটনা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সঠিক স্থানে ফুটওভারব্রিজ না বসানো, আইনের প্রয়োগ না থাকা ও সচেতনতার অভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হন পথচারীরা।
সূত্র জানায়, নগরের শাহ আমানত সেতু সংযোগ সড়ক, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, ষোলশহর, ২নং গেট, জিইসি মোড়, লালখানবাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, আগ্রাবাদ, নিমতলা বিশ্বরোড, অলংকার, হালিশহর, বড়পোল, কাস্টমস, সল্টগোলা ক্রসিং এবং সিমেন্ট ক্রসিং মোড়গুলোতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনা ঘটলেও স্থাপন করা হয়নি কোনো ফুটওভারব্রিজ।
বর্তমানে মোট সাতটি ফুটওভারব্রিজ রয়েছে নগরে। এর মধ্যে ইপিজেড এলাকায় দুটি, স্টেশন রোড, কর্নেলহাট, দামপাড়া বাওয়া স্কুলের সামনে, নিউমার্কেট ও ফকিরহাটে রয়েছে একটি করে। তবে এসব স্থানে ফুটওভারব্রিজ থাকলেও সেগুলো তেমন একটা ব্যবহার হয় না। গাড়ির আধিক্য থাকলেও রাস্তার মধ্য দিয়েই পারাপার হতে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করেন পথচারীরা।
রোববার (৩১ মার্চ) দুপুর ২টায় নগরের কর্নেলহাট এলাকায় দেখা যায়, সামনে ফুটওভারব্রিজ থাকলেও কেউ সেটি ব্যবহার করছেন না। সড়কের মাঝখান দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন প্রায় সবাই। তবে কয়েকজন ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার করছেন।
কারণ জানতে চাইলে পথচারী মো. জসিম জয়নিউজকে বলেন, ফুটওভারব্রিজে উঠতে অনেক সময় ব্যয় হয়। তাই তাড়াতাড়ি রাস্তা দিয়ে পার হয়ে যাই।
ঝুঁকির কথা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মরণ যেদিন হবে সেদিন তো মরেই যাব। ওভারব্রিজে উঠলেও মরব, না উঠলেও মরব!
স্কুলপড়ুয়া বাচ্চাকে নিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে পার হচ্ছিলেন গৃহবধূ শারমিন আক্তার। তিনি বলেন, বাচ্চারা ওভারব্রিজে উঠতে চায় না। তাই রাস্তার মাঝখান দিয়েই পার হই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর মুহাম্মদ সিকান্দার খান জয়নিউজকে বলেন, ফুটওভারব্রিজ কোথায় স্থাপন করা হচ্ছে সেটা একটি বিষয়। যেখানে ফুটওভারব্রিজ দরকার নেই, সেখানে যদি ফুটওভারব্রিজ বসানো হয় তাহলে মানুষ সেটি কেন ব্যবহার করবে। তাই ফুটওভারব্রিজ বসানোর আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সমীক্ষা করতে হবে। সমীক্ষা ছাড়া ফুটওভারব্রিজ বসালে এরকমই অবস্থা হবে।
তিনি আরো বলেন, ফুটওভারব্রিজ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে পথচারীদের সচেতন করতে হবে। বিভিন্ন সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজন করতে হবে। এছাড়া রাজধানী ঢাকায় সড়কের আইল্যান্ডে যেমন বড় লোহার বেষ্টনী দেওয়া থাকে, সেটি চট্টগ্রামেও চালু করা যেতে পারে। এছাড়া আইনের প্রয়োগের ক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কঠোর হতে হবে।
নগর পরিকল্পনাবিদ প্রকৌশলী জাহিদ আবছার চৌধুরী জয়নিউজকে বলেন, মানুষ যেহেতু ব্যবহার করছে না, সে কারণে ফুটওভারব্রিজ কমিয়ে দিয়ে জেব্রাক্রসিংয়ে রাস্তা পারাপার হতে উৎসাহিত করতে হবে। এক্ষেত্রে ট্রাফিক ব্যবস্থাকে আরো জোরদার করতে হবে। গাড়ির চালকরা যাতে জেব্রাক্রসিংয়ের সামনে গাড়ির গতি কমায় সেদিকে নজর দিতে হবে।