বাঁশখালীতে দিনের বেলায় সংরক্ষিত বনাঞ্চলের পাঁচ শতাধিক গাছ কেটে নিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রকাশ্যে এ গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার সরল ইউনিয়নের জঙ্গল পাইরাং এলাকার বনাঞ্চল থেকে আনুমানিক ২২ লাখ টাকা মূল্যের এসব গাছ কেটে নেওয়া হয়।
সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে থাকা ওই গাছগুলো কেটে ফেলায় জমির মালিক জাফর আহমদ বাদী হয়ে ২০-২৫ জনকে আসামি করে বাঁশখালী থানায় এজাহার দিয়েছেন।
এ বিষয়ে জাফর আহমদ জয়নিউজকে বলেন, জঙ্গল পাইরাং একটি সংরক্ষিত বনাঞ্চল। এখানে ৪০ বছর আগে বন্দোবস্তি নেওয়া আমার ৫৪ শতক জায়গা আছে। ওই জায়গায় ৩ হাজার বনজ ও ফলজ গাছ রোপণ করেছিলাম। প্রতিটি গাছের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছর হয়েছে।
তিনি অভিযোগ করেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে স্থানীয় চিহ্নিত বনদস্যু রবিউল হোছাইন, তৈয়ব উদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, আব্দুল আলিম, নুরুল কাদেরসহ আরও ২০-২৫ জন দুর্বৃত্ত আমার ৫ শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে। বিষয়টি আমি প্রথমে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের জানালে তারা বনদস্যুদের বাঁধা দেন। তাঁদের কথা অমান্য করে গাছ কাটা বন্ধ না করলে থানা পুলিশের কাছে এজাহার দিই। এখবর পেয়ে বনদস্যুরা গাছ কাটা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। এরমধ্যে ৫ শতাধিক গাছ কেটে ফেলে তারা। যার আনুমানিক মূল্য ২২ লাখ টাকা হবে।
স্থানীয় ইউপি মেম্বার আব্দুর রহমান বলেন, ‘এসব বনদস্যুদের পেশা হচ্ছে বনাঞ্চলের যত্রতত্র গাছ কেটে বিক্রয় করা। কয়েকদিন আগেও বিভিন্ন সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ কেটে নিয়েছে। এসব বনদস্যুদের দমন করা না গেলে পাহাড়ে সরকারি-বেসরকারিভাবে লাগানো কোন গাছই অক্ষত থাকবে না।’
বাঁশখালী থানার এসআই আব্দুল কুদ্দুস বলেন, ‘গাছ কাটার ব্যাপারে কতিপয় বনদস্যুদের অভিযুক্ত করে এজাহার দিয়েছেন জনৈক জাফর আহমদ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে গাছ কাটা বন্ধ রয়েছে।’
চেচুরিয়া বনবিট কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বলেন, ‘গাছ কাটার স্থানটি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভিতরে বিষয়টি ঠিক। তবে গাছ ও জায়গাটি ব্যক্তি মালিকানাধীন। গাছ কাটার খবর পেয়ে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।’
গাছ কর্তনের অভিযোগ প্রসঙ্গে রবিউল হোছাইন জয়নিউজকে বলেন, ‘গাছ ও জায়গার মালিক দাবিদার ব্যক্তি বিএনপি করে তাই এতদিন ভোগ করেছে। এখন জায়গা ও গাছগুলো আমরা ভোগ করব। তবে আমরা বনদস্যু নই।’