সংসদে থাকা বিএনপিকে আপাতত ছাড় দেবে ক্ষমতাসীন সরকার। সংসদ বিধি অনুসারে যেকোনো বিষয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা কথা বলতে চাইলে তাদের পর্যাপ্ত সময় দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
সংখ্যায় বিবেচনা না করে তাদের সব ধরণের গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেও সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সদস্য ছাড়াও তাদের জন্য পছন্দের আবাসন, অফিস, সংসদীয় বিদেশ ট্যুরসহ সবধরণের সুযোগ-সুবিধা সরকারি দলের এমপিদের মতো দেওয়া হচ্ছে।
এছাড়া বিএনপির সংসদ সদস্যরা সংসদে অবস্থান করা অবস্থায় তাদের নিয়ে যেন কটূক্তি না করা হয় এজন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সংসদ সচিবালয় থেকে। মূলত সংসদকে কার্যকর করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকেও দলীয় এমপিদের যথাসময়ে সংসদে উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। সব মিলিয়ে শপথ নিয়ে সংসদে যোগ দেওয়ায় বিএনপিকে সর্বোচ্চ মূল্যায়ন করবে সরকার। একাধিক সূত্র বিষয়টি জয়নিউজকে নিশ্চিত করেছে।
এদিকে বিএনপি সংসদে যোগ দেওয়ায় খুশি আওয়ামী লীগ। আর তাই বিএনপির সংসদ সদস্যরা যেন কোনভাবেই অভিযোগ তুলতে না পারে যে তাদের সংখ্যা কম বলে মূল্যায়ন করা হয় না সেদিকে নজর দিতে দলের এমপিদের সতর্ক করা হয়েছে।
কারণ বিএনপি সংসদে যোগ দেওয়ায় সরকারের ইমেজ দেশ-বিদেশে বেড়েছে। আন্তর্জাতিকভাবে সরকারের বৈধতা প্রকাশ পেয়েছে। দেশ-বিদেশে সরকারের উপর সাধারণ মানুষের আস্থা বাড়বে। সুতরাং সংসদ ইস্যুতে যেন কোনভাবেই বিএনপি বয়কট না করে সেদিকেও নজর রাখছে দলটি।
একাদশ নির্বাচনের পর বর্তমান সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি হলেও তারা সেখানে তেমন কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারছে না। কারণ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এখন খুবই অসুস্থ। তিনি রাজনীতি থেকে অবসর নেওয়ার জন্য যা যা দরকার তার সবই করছেন। এ জন্য জাতীয় পার্টি দৃশ্যমান কোনো কিছু করতে পারছে না।
এজন্য সরকার চায় বিএনপির সংসদ সদস্যরা যেন নিয়মিতভাবে সংসদে থাকে। ইতোমধ্যে বিএনপির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য চিফ হুইপের সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানা গেছে।
চিফ হুইপ বিএনপির প্রতিনিধি দলকে জানিয়েছেন, তারা বিএনপির প্রতি শ্রদ্ধাশীল। যেকোনো বিষয়ে বিএনপির সংসদ সদস্যরা যেন চিফ হুইপের সঙ্গে যোগাযোগ করেন সেটাও তাদের বলে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুল-উল-আলম হানিফ জয়নিউজকে বলেন, বিএনপি সংসদে যোগ দেওয়ায় সংসদের সৌন্দর্য বেড়েছে। এখন সংসদকে কার্যকর করার দায়িত্ব সবার। বিএনপি যেকোনো ইস্যুতে কথা বলতে চাইলে সরকারের কিংবা আওয়ামী লীগের কোনো বাধা থাকবে না।
তিনি আরো বলেন, সংসদ চলবে সংসদের নিয়মে। আমরা চাই বিএনপি সংসদে থাকুক। সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলুক। কারণ সংসদ হলো গণতান্ত্রিক পন্থার অন্যতম মাধ্যম। তাদের দাবিগুলো সংসদে তারা তুলে ধরবেন এটাই আমরা আশা করি।
এদিকে বিএনপির নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুল সাত্তার ভূঁইয়া জয়নিউজকে বলেন, আমরা সংসদে যোগ দিয়েছি সাধারণ মানুষের জন্য। নিজেদের চাওয়া পাওয়ার জন্য সংসদ নির্বাচন করিনি। আমরা সাধারণ মানুষের দাবিগুলো সংসদে তুলে ধরবো। সে সঙ্গে বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার মুক্তি চাইব। কারণ খালেদা জিয়া একজন বয়স্ক মানুষ। তিনি জামিন পেতেই পারেন।
তিনি আরো বলেন, আশা করি জাতীয় সংসদে আমাদের সংখ্যায় বিবেচনা করা হবে না। আমরা তথ্য প্রমাণ দিয়ে কথা বলব।
সংসদ কার্যকর করতে হলে বিরোধীদলের বিকল্প নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন।