রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে প্রত্যাবাসন বিষয়ে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের তৃতীয় কমিটিতে উন্মুক্ত ভোটে ওআইসি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের যৌথভাবে আনীত একটি প্রস্তাব পাস হয়েছে।
প্রস্তাবের পক্ষে ১৪২টি, বিপক্ষে ১০টি এবং ভোট প্রদানে বিরত থাকে ২৬টি দেশ। ওআইসি ও ইইউর পক্ষে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়া এই প্রস্তাব উত্থাপন করে। ওআইসি ও ইইউর সকল সদস্য রাষ্ট্র এবং যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকোসহ মোট ১০৩টি দেশ এই প্রস্তাবে কো-স্পন্সর করে। শনিবার (১৭ নভেম্বর) জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, প্রস্তাবটি ভোটে যাওয়ার আগে এর যৌক্তিকতা তুলে ধরে ওআইসির পক্ষে তুরস্ক ও ইইউর পক্ষে অস্ট্রিয়া বক্তব্য রাখে। তুরস্ক ও অস্ট্রিয়ার বক্তব্য সমর্থন করে প্রস্তাবের পক্ষে ভোটদানের আহ্বান জানায় যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরব ও বাংলাদেশ। ভোট গ্রহণের আগে ও পরে দেওয়া বক্তব্যে প্রায় সকল সদস্য দেশ জোরপূর্বক বাস্তুহারা রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার ও জনগণের অবদানের কথা উল্লেখ করে।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন তার বক্তব্যে প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন এবং রোহিঙ্গাদের প্রতি দায়িত্ব পালনের স্বার্থে এই প্রস্তাবকে সমর্থন করতে সদস্য দেশসমূহের প্রতি আহ্বান জানান।
গত ১৫ নভেম্বর বাংলাদেশ থেকে স্বেচ্ছায় রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত না যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের আশ্বাসের প্রতি কোনোভাবেই আস্থা রাখতে পারেনি এবং একটি পরিবারও মিয়ানমারে স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে সম্মত হয়নি। অতএব রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ তৈরির নিশ্চয়তা বিধানে জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট সংস্থাসমূহকে অবশ্যই মিয়ানমারে বাধাহীন প্রবেশের সুযোগ দিতে হবে।
তিনি বলেন, রোহিঙ্গাদের ধরে রাখা বা জোর করে ফেরত পাঠানো- এর কোনটিতেই দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ নেই।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের চেয়েও বেশি ভোটে এবারের প্রস্তব পাস মিয়ানমারের বিপক্ষে বিশ্ব জনমতের জোরালো অবস্থানেরই সুস্পষ্ট প্রতিফলন। এই প্রস্তাব রোহিঙ্গাদের টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন ও চলমান সংকটের স্থায়ী সমাধানে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।