লিঙ্গ সাম্যের পুরস্কার প্রাপকরা সকলেই পুরুষ! যা নিয়ে তুমুল বিদ্রুপের মুখে পড়েছে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি প্রশাসন।
রোববার দুবাইয়ের শাসক তথা আমিরশাহির ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম প্রশংসাপত্র এবং পদক তুলে দিয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং পরিসংখ্যান দফতরের বেশ কয়েকজন পুরুষ কর্মীর হাতে। কেউ পেয়েছেন লিঙ্গ সাম্যে বিশ্বাসী সেরা সরকারি কর্মীর পুরস্কার। কেউ লিঙ্গ সাম্যে উদ্যোগী হয়ে পুরস্কার।
উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং অভ্যন্তরীণ মন্ত্রী লেফটেন্যান্ট জেনারেল শেখ সইফ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান ‘জেন্ডার ব্যালান্স ইনডেক্স’-এ প্রথম পুরস্কার পান। আমিরশাহির সেনাবাহিনীতে মহিলাদের জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটির সুবিধা দিয়েছেন বলে তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হয়।
এক বিবৃতিতে মাকতুম বলেছেন, ‘আমিরশাহির প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে প্রথম থেকেই লিঙ্গ সাম্যের ভাবনা মাথায় ছিল। সমাজে মহিলাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, তাঁদের কাজের অধিকার— এ সবই তাই প্রাধান্য পেয়েছে বরাবর।’ যে মহিলাদের কথা বলে এত কিছু, তাঁদের একজনও তা হলে পুরস্কার পেলেন না কেন? সমালোচনার মুখে পড়ে দুবাইয়ের সংবাদমাধ্যমে প্রচার করা হয়, এক মহিলার উদ্যোগকে স্বীকৃতি দিয়েছেন মাকতুম। তিনি অর্থাৎ শেখা মানাল বিন্ত মহম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম আরও এক উপ-প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী এবং লিঙ্গ সাম্য কাউন্সিলের প্রধান।
অতীতে অবশ্য ‘জেন্ডার ব্যালান্স ইনডেক্স’-এ মহিলারা পুরস্কার পেয়েছেন। ২০১৭ থেকে এই পুরস্কার দেওয়া শুরু হয়। সে বারই এই ইনডেক্স শুরু করে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২১ সালের মধ্যে লিঙ্গ সাম্যে বিশ্বাসী ২৫টি দেশের মধ্যে জায়গা করে নেওয়ার কথা ঘোষণা করে আমিরশাহি।
রাষ্ট্রপুঞ্জের তথ্য অনুযায়ী, পারস্য উপসাগরীয় দেশগুলির মধ্যে আমিরশাহি লিঙ্গ সাম্যে সবচেয়ে এগিয়ে। গোটা পশ্চিম এশিয়ার নিরিখে লিঙ্গ সাম্যে ইজ়রায়েলের পরেই আমিরশাহির স্থান। সেই দেশে এমন বৈষম্যে স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে।
তবে এ দেশে কর্মরত বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দাবি, মহিলাদের বৈষম্য রুখতে যে সব আইন এখানে হয়েছে, সেগুলির ঠিকমতো প্রয়োগ হয়নি। মানবাধিকার পর্যবেক্ষক গোষ্ঠীর দাবি, গত বছর পর্যন্তও লিঙ্গের ভিত্তিতে হওয়া বৈষম্যের অভিযোগের সুরাহা ছিল না, কারণ ২০১৫ সালের বৈষম্য-বিরোধী আইনে তা অন্তর্ভুক্ত করা নেই। তা ছাড়া, স্বামীর জন্য স্ত্রী পারিবারিক হিংসার শিকার হলেও বর্তমান আইনে কোনও সুবিধা পান না মহিলারা।