সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনটিকে ঘিরে প্রতিটি নির্বাচনেই থাকে কৌতূহল। কারা প্রার্থী হচ্ছেন, বিদ্রোহী প্রার্থী থাকছেন কি-না, দলীয় বা জোটগত অবস্থান কি, এমন নানা প্রশ্ন থাকে এই আসনটিকে নিয়ে।
আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও আলোচনায় উঠে এসেছে আসনটি। যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার পর নিবন্ধন বাতিল হওয়া জামায়াতে ইসলামী এই আসনে কোন দলের ব্যানারে এবং কোন প্রতীকে নির্বাচন করবে তা নিয়ে ছিল বড় ধরনের কৌতূহল।
অবশেষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এসেছে। জামায়াত এই আসনে নির্বাচন করতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে। আগামী ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচনে তাদের প্রতীক হবে ধানের শীষ।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মোহাম্মদ ইসহাক জয়নিউজকে বলেন, ঐক্যফ্রন্ট জামায়াতকে যে ২৫টি আসন দিচ্ছে তার সবক’টিতেই জামায়াত ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচন করবে।
এই আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী হিসেবে আছেন সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম। তিনি জামায়াতের নায়েবে আমির। কিছুদিন ভারপ্রাপ্ত আমিরও ছিলেন।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই আসনে প্রার্থীতার ক্ষেত্রে শামসুল ইসলামের প্রধান মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন আরেক জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী। নাগরিক ঐক্য পরিষদের ব্যানারে তাঁর নামেও মনোনয়ন ফরম কেনা হয়েছিল। কিন্তু শেষমুহূর্তে তিনি তা জমা দেননি। তবে আসনটিতে এখনো ছায়া প্রার্থী হিসেবে আছেন দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেক।
শামসুল ইসলাম নাশকতা, বিস্ফোরণ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর হামলাসহ ১০ মামলার আসামি। একাধিক মামলায় জামিন না হওয়ায় তিনি কারাগারে আছেন। জামায়াত নেতাকর্মীদের মাঝে কানাঘুষা চলছে শামসুল ইসলামের সম্পদের হিসাব নিয়েও দুদক অগ্রসর হতে পারে। তাই বিকল্প হিসেবে তারা জাফর সাদেককে মাঠে রেখেছে। অবশ্য জাফর সাদেকের বিরুদ্ধেও মামলা আছে ২টি।
তাই নির্বাচন কে করবেন সে ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি জামায়াত। শেষ পর্যন্ত কে নির্বাচনি মাঠে থাকছেন জানতে চাইলে মোহাম্মদ ইসহাক বলেন, এ বিষয়ে দল ও জোটের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানা যাবে ২ ডিসেম্বর।
সাতকানিয়া থানার ওসি মোঃ রফিকুল হোসেন জয়নিউজকে জানান, আ ন ম শামসুল ইসলামের বিরুদ্ধে নাশকতা, বিস্ফোরণ, জ্বালাও-পোড়াওসহ বিভিন্ন অপরাধে ১০টি মামলা রয়েছে। অপরদিকে জাফর সাদেকের বিরুদ্ধে রয়েছে ২টি মামলা। আর মনোনয়নপত্র জমা না দেওয়া জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরীর বিরুদ্ধে রয়েছে ৩৫টি মামলা।
তবে নৌকার প্রার্থী অধ্যাপক ড. আবু রেজা নেজামুদ্দীন নদভী এসব কোন কিছুকেই চ্যালেঞ্জ ভাবছেন না। তিনি জয়নিউজকে জানান, বিগত পাঁচ বছরে জননেত্রী শেখ হাসিনা সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার মানুষের জন্য যে পরিমাণ উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছেন এবং বাস্তবায়ন হয়েছে, তার ফলশ্রুতিতে এই এলাকার মানুষ নৌকা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেই না।
জয়নিউজ/জুলফিকার