সীতাকুণ্ডে বিষাক্ত মদ পানে নাছির উদ্দিন নামে এক ব্যবসায়ীর মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় মুমূর্ষুবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিকে।
এদিকে নিহত ব্যবসায়ীর পরিবার দাবি করেছে, সীতাকুণ্ডের ফকিরহাট গরুর বাজারের ইজারাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ কৌশলে মদের সঙ্গে বিষ মিশিয়ে পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে পুলিশ আটক করেছে। ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড কি-না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
জানা যায়, গত সোমবার (২৫ মার্চ) বিকেলে সীতাকুণ্ড পৌরসভার ফকিরহাট গরুর বাজারের টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এক কোটি তিন লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে ফকিরহাট বাজারের টেন্ডার পান সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিসহ তার পার্টনাররা। ওই রাতে তারা স্থানীয় সৌদিয়া আবাসিক হোটেলে বাজার ইজারার বিষয় নিয়ে বৈঠক বসেন। বৈঠকের একপর্যায়ে তারা মদ পান করে অচেতন হয়ে পড়েন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় তারা বাড়িতে ফিরে যান। কিন্তু বাড়িতে গিয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন নাছির ও রবি।
নিহত নাছিরের ছোট ভাই জাকির হোসেন ও বন্ধু সাঈদ হোসেন জয়নিউজকে বলেন, নাছিরের পুরো শরীর কালো বর্ণ ধারণ করে মুখ দিয়ে লালা বের হতে হতে একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে পরিবারের লোকজন তাকে সীতাকুণ্ড স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তারা আরও বলেন, বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ পরিকল্পিতভাবে এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে।
একই ঘটনায় মুমূর্ষুবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল সেন্টার হাসপাতালে ভর্তি করা হয় সীতাকুণ্ড উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবিকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় বুধবার দুপুরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে।
রবির ভাই জাহাঙ্গীর আলম জয়নিউজকে বলেন, আমাদের ধারণা মাদকে বিষ মিশিয়ে পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। বাজার ইজারাকে কেন্দ্র করে একটি পক্ষ কৌশলে এ ঘটনা ঘটাতে পারে।
সীতাকুণ্ড মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেলওয়ার হোসেন জয়নিউজকে বলেন, বিষাক্ত মদ পানে ব্যবসায়ী নাছিরের মৃত্যু হতে পারে। মুমূর্ষুবস্থায় আছেন উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক রবিউল হোসেন রবি। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সৌদিয়া হোটেলের ম্যানেজারকে আটক করা হয়েছে। নিহত নাছিরের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাদকের সাথে পরিকল্পিতভাবে বিষ মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হচ্ছে। এ ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোন প্রতিহিংসা রয়েছি কি-না বা ব্যবসায়িক কোন বিরোধ আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হবে।
সৌদিয়া হোটেলের মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জয়নিউজকে বলেন, সোমবার রবিসহ তার পার্টনাররা হোটেলে এসে রাতে মদ পান করে। সোমবার রাতেই মদ পান করে তারা ঘুমিয়ে যায়। মঙ্গলবার বিকেলে তারা হোটেল থেকে বাড়িতে চলে যায়। পরবর্তীতে নাছিরের মৃত্যু হয় এবং রবিকে মুমূর্ষুবস্থায় ঢাকায় প্রেরণ করা হয়েছে।