এক কোটি ২৭ লাখ পাঠক। বাংলা ভাষার পত্রিকা! ভাবা যায়? যে পত্রিকার সদর দপ্তরে নেই কোন সাইনবোর্ড। ‘কাজেই পরিচয়‘ নীতিতে অটল কলকাতার ৬ নং প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিটে সাদা-ধুসর যে বহুতল ভবনটি দাঁড়িয়ে আছে, তারই নাম- আনন্দবাজার পত্রিকা। কলকাতার প্রাণকেন্দ্র ধর্মতলা থেকে পাথরছোড়া দূরত্বে এই পত্রিকা অফিস।
অভিজাত এই পত্রিকা ১৯৫৪ সালে ভারতীয় প্রেস কমিশন থেকে দেশের একক সংস্করণের সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র হিসাবে খ্যাত। ২০১৬ সালের জুন মাসে দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন অভীক সরকার। বর্তমান সম্পাদক অনির্বাণ চট্টোপাধ্যায়।দেখতে দেখতে আনন্দবাজার পত্রিকার বয়স শতবর্ষের দ্বারপ্রান্তে উপনীত। আনন্দবাজার পত্রিকা যাত্রা শুরু করেছিল ১৩ মার্চ, ১৯২২ সালে।
পত্রিকাটির আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল দোলযাত্রার দিন। প্রথম সংখ্যাটি ছাপা হয়েছিল পুরোপুরি লাল কালিতে। যাকে ব্রিটিশ সরকারের মুখপত্র ইংলিশম্যান এক ‘বিপদ সংকেত’ বলে ভেবেছিল। ইংলিশম্যানের সেই দূরদৃষ্টির প্রশংসা না-করে উপায় নেই। কেননা, আনন্দবাজার পত্রিকা দেশের স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে নির্ভীক ও আপসহীন মনোভাব নিয়ে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিতে কাঁপন ধরিয়ে দিয়েছিল। আনন্দবাজার পত্রিকা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলা ভাষায় প্রকাশিত একটি দৈনিক পত্রিকা। কলকাতার এবিপি প্রাইভেট লিমিটেড যার প্রকাশক। প্রকাশ-সংখ্যার ভিত্তিতে এটি ভারতে বাংলা ভাষায় বহুল প্রচারিত দৈনিক তো বটেই, পৃথিবীর বুকেও সর্বাধিক সংখ্যক পাঠকপ্রিয় বাংলা দৈনিক।
কলকাতা, নয়াদিল্লি, ভুবনেশ্বর, রাঁচি, শিলিগুড়ি ও ভারতের অন্যান্য শহর থেকে নিয়মিত এটি প্রচারিত হয়। প্রাক্-স্বাধীনতা যুগে আনন্দবাজার পত্রিকা ছিল জাতীয়তাবাদের উদ্গাতা, স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সে দাঁড়িয়েছে এই বাংলা ও তার মানুষদের সার্বিক উন্নয়নের পক্ষে। পক্ষপাতহীন মতামত, গঠনমূলক সমালোচনা, অদম্য সাহস ও আপসহীন মনোভাব এ হলো মাত্র কয়েকটা দিক, যা আনন্দবাজার পত্রিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে বিশ্বের অন্যতম প্রভাবশালী পত্রিকা হিসেবে।