হালদা নদীর খলিপার ঘোনা এলাকায় একটি মৃগেল (মা-মাছ) মরে পঁচে ভেসে উঠেছে।
মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে মাছটি ভাসতে দেখলে স্থানীয়রা বিষয়টি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরিয়া ও পিকেএসএফ এর আওতাধীন আইডিএফ (ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন) হালদা প্রকল্পের কর্মকর্তাদের অবহিত করে।
পরে তারা মাছটি উদ্ধার করে হাটহাজরী উপজেলার গড়দুয়ারা ইউনিয়নের নয়াহাট এলাকায় স্থানীয়দের সহযোগিতায় মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে।
চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও হালদা রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক হালদা গবেষক ড. মো. মনজুরুল কিবরীয়া মুঠোফোনে জয়নিউজকে জানান, মঙ্গলবার হালদা নদী থেকে একটি মৃত মৃগেল মাছ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। কার্পজাতীয় (মৃগেল) ওই মা-মাছটির ওজন হবে প্রায় ৮ কেজি। দৈর্ঘ্য প্রায় ৩ ফুট (৩৩ ইঞ্চি)। মাছটির শরীরে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নদীতে হালদার ভাঙন রোধে তীর সংরক্ষণ বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত যান্ত্রিক যানের পাখার আঘাতে এ মা-মাছটিসহ জলজ প্রাণী প্রতিনিয়ত নদীর মৎস্যকুল ও জীববৈচিত্র্য মারা পড়ছে বলে তিনি দাবি করেন।
তিনি আরও জানান, স্থানীয়রা মাছটি উদ্ধার করে নিয়ে আসলে পরীক্ষা করে দেখি মাছের ঘাড়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রাতেই কোনো ড্রেজারের আঘাতে মাছটি মারা গেছে বলে ধারণা করছি। পঁচে যাওয়ায় মাছটি ল্যাবে আনতে পারিনি। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় মাছটি মাটিতে পুঁতে দেওয়া হয়েছে।
হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রুহুল আমীন জয়নিউজকে বলেন, প্রশাসন তথা আমাদের চোখে ফাঁকি দিয়ে কিছু কিছু বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত যান্ত্রিক যানের চলাচল আমাদের কাছে দৃশ্যমান। তাই মঙ্গলবার দুপুরে গড়দুয়ারা নয়াহাট এলাকায় হালদা নদীতে নিষিদ্ধ ইঞ্জিন চালিত নৌকা নদীতে চালানো অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চট্টগ্রামের কর্ণফুলি থানাধীন শিকলবাহা এলাকার দানো মেম্বার বাড়ির মো. আবুদল মান্নানের ছেলে মো. আদুল আজিজ (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে ১০ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মা-মাছ ডিম ছাড়ার মৌসুমে আঘাতজনিত কারণে মরে যাওয়া সত্যিই দুঃখজনক। মা-মাছ সংরক্ষণে আমরা সব সময় সোচ্চার রয়েছি। অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি। তবে হালদায় পোনা ও মা-মাছ রক্ষায় সকলকে সহযোগিতা করতে হবে।