বহুল কাঙ্খিত স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগামী ২৫ জুন। তবে সেতুতে যানবাহন চলবে ২৬ জুন সকাল ৬টা থেকে।
এমনটাই জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। আজ রবিবার (১২ জুন) পদ্মা সেতুর সার্ভিস এরিয়া ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
তিনি জানান, বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী বাংলাদেশি অর্থনীতিবিদ প্রফেসর মুহম্মদ ইউনুস, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া প্রমুখকে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হবে। পদ্মা সেতুর স্থায়ীত্ব ১০০ বছর বলেও জানান ওবায়দুল কাদের।
পদ্মা সেতুর মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সারা দেশে একযোগে দেখানোর ব্যবস্থা করতে ১ জুন সব জেলা প্রশাসককে (ডিসি) ইতোমধ্যে চিঠি দিয়েছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। পাশাপাশি অন্য সাত জেলায়ও উৎসবমুখর পরিবেশে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান দেখানোর জন্য বলা হয়েছে।
একই দিনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে বলা হয়েছে। এছাড়া বাকি জেলাগুলোতে একদিনের জন্য অনুষ্ঠান পালন করতে বলা হয়েছে। তবে কোনো জেলা চাইলে একাধিক দিনও অনুষ্ঠান করতে পারবে বলেও জানানো হয়েছে।
এদিকে স্বপ্নের পদ্মা সেতুর স্ট্রিট লাইটের পরীক্ষামূলক কার্যক্রম সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। সাত দিনে পর্যায়ক্রমে ৪১৫টি লাইট জ্বালানো হয়। সেতু উদ্বোধনের দুই সপ্তাহ আগেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ায় স্বস্তিতে কর্তৃপক্ষ।
তবে চোখ ধাঁধানো পদ্মা সেতুর আর্কিটেকচারাল লাইটি স্থাপন হবে উদ্বোধনের পর। সড়কপথের লাইটিং রাতের বেলায় সেতুকে দিনের মতো আলোকিত রাখবে।
পদ্মা সেতুতে ল্যাম্পপোস্ট রয়েছে ৪১৫টি। এছাড়া দুপাড়ের সংযোগ সড়কে বসেছে ২০০টি ল্যাম্পপোস্ট। এরই মধ্যে পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তে পল্লী বিদ্যুৎ থেকে ৮০ কিলোওয়াটসম্পন্ন বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। সেতুর দুই প্রান্তের সাবস্টেশন থেকে এসব ল্যাম্পপোস্টে দেয়া হবে বিদ্যুৎ সংযোগ।
পদ্মা সেতু দেশের পদ্মা নদীর ওপর নির্মাণাধীন একটি বহুমুখী সড়ক ও রেলসেতু। এর মাধ্যমে মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের সঙ্গে শরীয়তপুর ও মাদারীপুর যুক্ত হবে। ফলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব অংশের সংযোগ ঘটবে।
দুই স্তরবিশিষ্ট স্টিল ও কংক্রিট নির্মিত ট্রাস ব্রিজটির ওপরের স্তরে থাকবে চার লেনের সড়কপথ এবং নিচের স্তরটিতে একটি একক রেলপথ। পদ্মা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা নদীর অববাহিকায় ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসানো হয়। ৬.১৫০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য এবং ১৮.১০ মিটার প্রস্থ পরিকল্পনায় নির্মিত হয়েছে স্বপ্নের এ সেতু।
খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর ৩০ হাজার ১৯৩ কোটি টাকা নিজস্ব অর্থায়নে ২০১৪ সালে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। পদ্মা সেতু খুলে দেয়ার দিন যতই এগিয়ে আসছে, সম্ভাবনা আর প্রত্যাশার নতুন দিকও উন্মোচিত হচ্ছে।
জেএন/টিটি