ভয়াবহ বন্যার কবলে সুনামগঞ্জবাসী, জেলা শহরে নেই বিদ্যুৎ

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিতে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছেন সুনামগঞ্জবাসী। বৃষ্টির সাথে ঝড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতেরও যেন বিরাম নেই। সময়ের সাথে সাথে বন্যা আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে।

- Advertisement -

বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে সদরসহ জেলার প্রায় সব প্রান্তের ঘরবাড়িতে। বন্যায় নিত্যপ্রয়োজনীয় সব ধরনের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলার বাসিন্দারা।

- Advertisement -google news follower

শহরসহ জেলার বিভিন্ন প্রান্তে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যার পানির সঙ্গে ঘরে ঢুকে পড়ছে মাছ, বিষাক্ত পোকামাকড় ও সাপ।

এদিকে বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে জেলা শহরে বিদ্যুৎ নেই। সকাল ৯টার দিকেও আসেনি বিদ্যুৎ। ফলে অন্ধকার রাতে বিভীষিকাময় সময় পার করেছেন সুনামগঞ্জের মানুষ।

- Advertisement -islamibank

বর্তমানে পুরো সুনামগঞ্জ শহরের ৯০ শতাংশ বসতঘরে পানি ঢুকে পড়েছে। ছাতক শহরের শতভাগ এলাকা বন্যার পানিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে। সুনামগঞ্জ ও ছাতক পৌর এলাকার প্রধান সড়ক হাঁটু পানি থেকে কোমরপানিতে ডুবে আছে। শহরের প্রধান সড়কগুলোয় অনায়াসে নৌকা চলাচল করছে।

৬৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পাঁচটি স্থান কোমর পানিতে ডুবে থাকায় সুনামগঞ্জের সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে।

জেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে ছাতক,তাহিরপুর দোয়ারাবাজার, বিশ্বম্ভপুর উপজেলা। এসব এলাকার প্রধান সড়ক এখন সাঁতার কাটার মতো নিমজ্জিত। নৌকা ছাড়া এসব উপজেলায় যাওয়ার বিকল্প কোনও বাহন নেই।

সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়া, সাহেব বাড়ির ঘাট, উকিলপাড়া, নুতনপাড়া, শান্তিবাগ হাছননগর, পাঠানবাড়ি জেলরোড, মধ্যবাজার, পশ্চিমবাজার, বড়পাড়া, আরপিনগর, মল্লিকপুর ওয়েজখালী, হাজীপাড়া, নবীনগরসহ ৯টি ওয়ার্ডের পাঁচ শতাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পানি ডুকে পড়েছে। এতে বিপাকে পড়েছেন হাজার হাজার ব্যবসায়ী।

বন্যার কারণে সুনামগঞ্জ শহরে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। বসতবাড়ির শত শত বিদ্যুতের মিটার পানিতে ডুবে গেছে।

সুনামগঞ্জ ও ছাতক শহরজুড়ে এখন থইথই পানি। শহরের এমন কোনও এলাকা ও সড়ক নেই যেটি বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়নি। সুনামগঞ্জ পৌর শহরের আলফাত স্কয়ার থেকে শুরু করে নবীনগর পর্যন্ত পানি আর পানি।

কোথাও হাঁটু, কোথাও এর চেয়ে বেশি পানি। কাজীর পয়েন্ট এলাকায় পানি বেশি থাকায় সেখানে নৌকায় যাতায়াত করেছেন লোকজন। দোয়ারা বাজারের ইউএনও ফারজানা প্রিয়াংকা জানান, দোয়ারাবাজার পুরোটাই বন্যাকবলিত। তারা প্রয়োজনীয় ত্রাণ বিতরণ করছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলায় সহায়তার জন্য ২৫০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এর মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় দেওয়া হয়েছে ২০ মেট্রিক টন করে। চারটি পৌরসভায় দেওয়া হয়েছে ৩০ মেট্রিক টন। এ ছাড়া নগদ ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এসব বিতরণ করা হচ্ছে।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, ১৬ জুন বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সীমান্ত নদী যাদুকাটা দিয়ে বিপদসীমার ১.৬ মিলিমিটার উপর দিয়ে ঢলের পানিতে তাহিরপুর উপজেলায় নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতির দিকে ধাবিত হয়েছে। জেলার সবকটি নদ-নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

জেএন/টিটি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM