ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি) এখন থেকে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে আর থাকছে না। মঙ্গলবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ইমানুয়েলস ব্যাংকুয়েট হলে যৌথভাবে সংবাদ সম্মেলন করে জোট ছাড়ার ঘোষণা দেয় এ দু’টি দল।
সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়, ‘বিএনপির নেতৃত্বে চার দলীয় জোটকে সম্প্রসারণ করে ১৮ দলীয় জোটে রূপান্তরের সময় থেকে ন্যাপ ও এনডিপি এই জোটের অংশীদার। যা পরবর্তীতে ২০ দলীয় জোটে রূপান্তর হয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের শরিক হিসেবে আমরা আমাদের সাধ্যমতো অবদান রাখতে সচেষ্ট ছিলাম। নিজেদের মতবিরোধ ও মতপার্থক্য থাকলেও জোটের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে সব সময়ই আন্তরিক ছিলাম।’
‘এমনকি ২০১৪ সালের নির্বাচনে নানা ধরনের ‘লোভনীয় প্রস্তাব’ থাকার পরও জোটের নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোর কেউ তৎকালীন ১৮ দলীয় জোট ত্যাগ করেনি। এই ত্যাগকে বিএনপি প্রধান রাজনৈতিক দল হিসেবে কোনোরকম মূল্যায়ন করেছে বলে আমাদের কখনোই প্রতীয়মান হয়নি। বরং তাদের ভাবখানা এরকম যে, তারা যাবে কোথায়? এছাড়া সোমবার (১৫ অক্টোবর) ২০ দলীয় জোটের বৈঠকেও বিএনপির উপস্থিত নেতৃত্ব বলেছে, তাদের ওপর আজকে যে ঝড় কিংবা চাপ তা শুধু ২০ দলীয় জোটের কারণেই সৃষ্টি হয়েছে। এই জোট না থাকলে তাদের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখোমুখি হতে হতো না।’
‘আমরা চাই না আমাদের কারণে কেউ চাপে থাকুক। সেটা আমরা প্রত্যাশা করি না। এই অবস্থার মধ্যে সম্প্রতি ২০ দলীয় জোটের প্রধান শরিক বিএনপি জাতীয় ঐক্যের নামে ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট’ নামে নতুন জোটের আত্মপ্রকাশ ঘটিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য- জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট আত্মপ্রকাশ করতে গিয়ে বিএনপি ও তার নতুন বন্ধুরা যেসব ঘটনার অবতারণা করেছেন, তা সত্যিই হতাশার।’
‘ঐক্যফ্রন্ট গঠনের ক্ষেত্রে সাবেক রাষ্ট্রপতি ও বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ডা. একিউএম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা সমগ্র জাতির সঙ্গে আমাদেরও হতাশ করেছে। তাছাড়া এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনে যাদের অগ্রণী ভূমিকা আমরা লক্ষ্য করেছি, তারা প্রায় সকলেই ১-১১ এর অরাজনৈতিক সরকার প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তাদের অনেকেই ‘মাইনাস টু’ ফর্মুলা বাস্তবায়নের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।’
‘তাই আমরা ন্যাপ ও এনডিপি সাংবিধানিক এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির পক্ষে। শুধু ক্ষমতার পালাবদলের নামে কোনো অশুভ শক্তির ক্ষমতা গ্রহণের মাধ্যমে আবারও দেশকে রাজনীতিকশূন্য করার কোনো অপচেষ্টায় অংশগ্রহণ করা একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা প্রত্যাশা করি না। এই প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এবং দলের সাংবিধানিক-নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতির স্বার্থে এই মুহূর্ত থেকে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে সকল সম্পর্ক ছিন্ন করছে ন্যাপ ও এনডিপি।’
এসময় উপস্থিত ছিলেন এনডিপি’র চেয়ারম্যান খোন্দকার গোলাম মোর্তজা, ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, এনডিপি মহাসচিব মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসা প্রমুখ।
জয়নিউজ/শহীদ