জাপান সরকার কক্সবাজারের মহেশখালীর মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে সহায়তা দেবে না।
টোকিওভিত্তিক সংবাদ সংস্থা জিজি ডট কমের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপান সরকারের সিদ্ধান্তটি দেশটির পররাষ্ট্র প্রেসসচিব হিকারিকো ওনো একটি সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন।
এদিকে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গতকাল বুধবার রাতে গণমাধ্যমকে জানান, মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে জাপানের না থাকার বিষয়টি পুরনো। আলোচনার মাধ্যমেই এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বাংলাদেশ মাতারবাড়ীর দ্বিতীয় পর্যায়ে কয়লার পরিবর্তে এলএনজি ও সোলার প্রকল্প করবে।
সংবাদ সংস্থা জিজি ডট কম জানায়, জাপান বাংলাদেশ ও ইন্দোনেশিয়ার জন্য কয়লাভিত্তিক প্রকল্পগুলোতে সরকারি উন্নয়ন সহায়তা স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে।
মাতারবাড়ী কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের প্রথম ধাপ বাস্তবায়নকারী তিনটি ‘ইপিসি’ ঠিকাদারের অন্যতম জাপানের সুমিতোমো করপোরেশন তিন মাস আগেই এই প্রকল্পে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল। এবার সরকারের দিক থেকেও এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা না করার সিদ্ধান্ত এসেছে।
ইপিসি হলো ‘ইঞ্জিনিয়ারিং’, ‘প্রকিউরমেন্ট’ ও ‘কনস্ট্রাকশন’ (নির্মাণ)। একটি ইপিসি ঠিকাদার তার প্রকৌশল থেকে নির্মাণ পর্যন্ত পুরো প্রকল্প বাস্তবায়নে দায়িত্ব পালন করে।
দেশে-বিদেশে পরিবেশবাদী কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে মাতারবাড়ী প্রকল্প বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন। তাঁদের দাবি, বাংলাদেশ এরই মধ্যে প্রয়োজনের তুলনায় অনেক বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে।
আন্তর্জাতিক চাপ এবং কয়লাবিদ্যুৎ সম্প্রসারণের জন্য তহবিল না পাওয়ায় গত বছর বাংলাদেশ ১০টি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্প বাতিল করে।
সিপিজিসিবিএল ৫১ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকা আনুমানিক ব্যয়ে মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ধাপের অধীনে ৬০০ মেগাওয়াট করে দুটি ইউনিট নির্মাণ করছে। জাইকা এই প্রকল্পের জন্য ৪৩ হাজার ৯২১ কোটি টাকা দিচ্ছে। সিপিজিসিবিএলের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাকি বিনিয়োগ কোম্পানি এবং বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে আসছে।
মাতারবাড়ী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য সরকার এনই মধ্যে এক হাজার ৬০৮ একর জমি অধিগ্রহণ করেছে। এর মধ্যে এক হাজার ২০০ মেগাওয়াটের আরো দুটি ইউনিট নির্মাণের দ্বিতীয় পর্যায়ের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে।
জয়নিউজ/পিডি