স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনের আর মাত্র দুই দিন বাকি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ। পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের পর মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাটে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তাই সেতুর আদলেই তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। ১১টি পিলারের ওপর ১০টি স্প্যান বসিয়ে তৈরি করা হচ্ছে মঞ্চ। মঞ্চের ঠিক সামনে পানিতে ভাসতে থাকবে বিশাল আকৃতির একটি নৌকা। দেখে মনে হবে পদ্মা সেতুর পাশ দিয়ে বড় একটি নৌকা চলছে। আগামী ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঐতিহাসিক রূপ দিতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।
সরেজমিন বাংলাবাজার ঘাটের উদ্বোধনী মঞ্চ এলাকায় দেখা যায়, সভাস্থলের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাজ করছে সেনাবাহিনী, র্যাব, পুলিশ, ফায়ার সার্ভিসসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিশাল এ আয়োজন ঘিরে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে বইছে উৎসবের আমেজ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরেই এখন সব ব্যস্ততা। প্রায় প্রতিদিনই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেতু এলাকা পরিদর্শনে যাচ্ছেন। অনুষ্ঠান সফল করতে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জনসভা ঘিরে তিন বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে আলোকসজ্জার কাজ করছেন শ্রমিকরা। মঞ্চের চারপাশে নেওয়া হয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করা হচ্ছে এ মঞ্চ। তারা অস্ত্র হাতে সার্বক্ষণিক স্পটে থাকছেন। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের নাশকতা এড়াতে গোয়েন্দা বাহিনীর কর্মকর্তারাও তৎপর রয়েছেন।
শিবচর উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে, ২৫ জুন শনিবার পদ্মা সেতুর দুই প্রান্ত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ও শরীয়তপুরের জাজিরা পয়েন্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সশরীর এসে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ি ইউনিয়নের বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় জনসভায় যোগ দেবেন। জনসভাকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রায় ১৫ একর জমির ওপর ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৪০ ফুট প্রস্থের বিশাল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য মঞ্চের ভেতরে ও বাইরে বসানো হয়েছে ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। থাকবে দেড় শতাধিক সিসিটিভি ক্যামেরা। র্যাব, পুলিশ, সেনা সদস্য, এসএসএফসহ নানা বাহিনীর তৎপরতায় এ এটি ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে রূপ নেবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন ঘিরে দক্ষিণ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। সভাস্থলে ৫০০ অস্থায়ী শৌচাগার, ভিআইপিদের জন্য আরও ২২টি শৌচাগার, সুপেয় পানির লাইন, তিনটি ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল, নারীদের আলাদা বসার ব্যবস্থা, প্রায় দুই বর্গকিলোমিটার আয়তনের সভাস্থলে দূরের দর্শনার্থীদের জন্য ২৬টি এলইডি মনিটর, ৫০০ মাইকের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। এ ছাড়া নদীপথে আসা মানুষের জন্য ২০টি পন্টুন তৈরি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও মোবাইল ফোন অপারেটরগুলো তাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ভ্রাম্যমাণ মোবাইল টাওয়ার নির্মাণ করছে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন জানান, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে জনসভায় ১০ লাখ মানুষের সমাগম হবে। তাদের সব ধরনের সুবিধা দিতে জেলা প্রশাসন প্রস্তুতি নিয়েছে। এ ছাড়া ২০ শয্যার একটি এবং ১০ শয্যার আরও দুটি ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসাকেন্দ্র খোলা হয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া থাকবে অ্যাম্বুলেন্স ব্যবস্থা।
জেএন/এমআর