বাংলাদেশে কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রীর একক ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে নিরলস সংগ্রামের কারনে প্রাণহানি কমানো ও কোভিডের সামাজিক সংক্রমণ রোধ সম্ভব হয়েছে বলে এখাতের বিশেষজ্ঞরা মন্তব্য করেছেন। কিন্তু এই সংক্রমন প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের সমন্বিত উদ্যোগ থাকলে ও এক্ষেত্রে ফলাফল আরও ভালো হতো। একটা সময় সমাজের যে কোন সমস্যায় স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দ ঝুঁকি নিয়ে সমস্যাগ্রস্থ মানুষের পাশে থেকেছেন। কালক্রমে সামাজিক সেই বন্ধন দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। তাই সমাজ পরিবর্তন বা সমাজের অগ্রগতিকে বহমান রাখতে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের সাথে সরকারী-বেসরকারী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন।
বৃহস্পতিবার (৩০ জুন) কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা পরিষদ হলরুমে কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধে কমিউনিটি লিডারদের সম্পৃত্তকরণ বিষয়ক কর্মশালায় সভায় বিভিন্ন বক্তাগন উপরোক্ত মন্তব্য করেন।
বেসরকারী সমাজ উন্নয়ন প্রতিষ্টান আইএসডিই বাংলাদেশ ও এনজিওদের শীর্ষ সমন্বয়কারী প্রতিষ্টান এডাব এর উদ্যোগে অনুষ্ঠানে আইএসডিই কর্মসুচি সমন্বয়কারী জাহাঙ্গীর আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান জেসমিন হক জেসি চৌধুরী। সভায় মূখ্য আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. ইফতেখারুল ইসলাম মিশুক, বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) তদন্ত মোঃ জুয়েল ইসলাম, ককসবাজার জেলা পরিষদের সাবেক প্যানেল চেয়ারম্যান ও চকরিয়া পৌর আওয়ামীলীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম লিটু, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আমিনুর রশিদ দুলাল, চকরিয়া কেন্দ্রিয় সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান সেলিম উল্লাহ প্রমুখ। সভায় আলোচনায় অংশনেন আইএসডিই বাংলাদেশ’র প্রশিক্ষন সমন্বয়কারী কামরুন নাহার শম্পা, সমাজ কর্মী সুধীর দাশ, জেলা ম্যৎস্যজীবি নেতা আনারকলি জলদাশ, জনপ্রতিনিধি নজরুল ইসলাম, সাংবাদিক নুরুদ্দোজা, মামুনুল ইসলাম মামুন, আইএসডিই বাংলাদেশ’র উপজেলা ব্যবস্থাপক জালাল উদ্দীন, আইএসডিই বাংলাদেশ’র প্রজেক্ট অফিসার আসিফ নুর হাসনাত, আইএসডিই বাংলাদেশ’র প্রশিক্ষন কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল ফাহিম প্রমুখ। সভায় রাজনৈতিক দলের নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, জনপ্রতিনিধি, গন্যমাণ্য ব্যক্তিসহ মোট ৪৫জন অংশগ্রহনকারী অংশনেন।
কর্মশালায় সভায় বিভিন্ন বক্তারা বলেন, করোনার ৪র্থ ঢেউ আবার দেখা যাচ্ছে। আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগতই বাড়ছে। কোভিড প্রতিরোধে জেলা-উপজেলা পর্যায়ে কোভিড সংক্রমন প্রতিরোধ কমিটি গঠন করা হলেও কাগজে কলমে এই কমিটি কাজ কার্যত অকার্যকর। কোভিড-১৯ সংক্রমণ রোধে স্থানীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবৃন্দের ভুমিকা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। সাধাারণ জনগনের মধ্যে কোভিড সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধিতে কমিউনিটি লিডাররা গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে পারেন। কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে মাক্স পরিধান, সামাজিক দূরত্ব বজায়, জনসমাগম এডিয়ে চলা এবং ঘন ঘন হাত ধোয়ার বিকল্প নাই। সাথে সাথে কোভিড-১৯ টিকা সকলকে অবশ্যই নিতে হবে। টিকার পরবর্তী উপসর্গ সম্পর্কে সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে। সকল প্রকার গুজব ও কু-সংস্কার পরিহার করতে হবে। প্রত্যেক রাজনৈতিক ও সামাজিক নেতৃবন্দকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে করোনা সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধিতে সমন্বিত ভাবে কাজ করার আহবান জানানো হয়।
উল্লেখ্য কোভিড-১৯ সংক্রমন প্রতিরোধে ঝুঁকি নিরূপণ, যোগাযোগ সম্পৃক্তকরণ ও টিকা-বার্তা যোগাযোগ জোরদারকরণ প্রকল্পের আওতায় করোনার ঝুঁকি-ভয়াবহতার ব্যাপারে কমিউনিটি লিডারদের সচেতন করা এবং তারা যাতে তারা স্থানীয়ভাবে অন্যদের মাঝে সচেতনতাবৃদ্ধিতে কাজ করতে পারে, সে লক্ষ্যেই এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
জেএন/এমআর