ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে কয়েক লাখ পর্যটক কক্সবাজারে আসবেন, এমন আশা করেছিলেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। সেভাবে সবকিছু গুছিয়ে অতিথি বরণে প্রস্তুতিও নেওয়া ছিল। এরপরও আশানুরূপ পর্যটক না মেলায় হতাশ পর্যটন ব্যবসায়ীরা।
গত রোজার ঈদের ছুটিতে সৈকত ভ্রমণে এসেছিলেন ১১ লাখের বেশি পর্যটক। তখন পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোয় ব্যবসা হয়েছিল ৫০০-৬০০ কোটি টাকার বেশি।
কক্সবাজার ট্যুরস অপারেটর মালিক সমিতির সভাপতি মো. রেজাউল করিম বলেন, কক্সবাজারে পর্যটক উপস্থিতি খুবই কম। কয়েকটি কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে মনে হয়। ঢাকা বা আশপাশের এলাকার যেসব মানুষ ঈদে কক্সবাজারে বেড়াতে পছন্দ করেন তারা হয়তো এবার পদ্মা সেতু এলাকায় গেছেন। এছাড়া সিলেটসহ উত্তরবঙ্গের ২০ জেলায় ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকটে রয়েছেন মানুষ। লাখো মানুষ এখনো বন্যাকবলিত। ঈদ বা অন্য ছুটিতে এসব অঞ্চলের মানুষ সৈকতে ভ্রমণে আসতো বেশি।
তিনি বলেন, আবার ঈদের ছুটির পরই শুরু হবে এসএসসি পরীক্ষা। পরীক্ষার্থী আছে এমন পরিবার ভ্রমণে আগ্রহী নয়। এছাড়া বাজারে নিত্যপণ্যের দাম ঊর্ধ্বগামী; অর্থসংকটে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। এ কারণে ভ্রমণের পরিকল্পনা বাদ দিয়েছে হয়তো।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম বলেন, অতীত সময়ের অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের ধারণা ছিল পর্যটকে ভরপুর থাকবে কক্সবাজার সৈকত। কিন্তু অতি সল্পসংখ্যক পর্যটকের দেখা পেয়েছি আমরা। হাজার দশেক যে পর্যটক এসেছেন তাদের মাঝে এক তৃতীয়াংশ স্থানীয়। ঈদের তৃতীয়দিনও তেমন বুকিং নেই বলে জেনেছি। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সবমিলিয়ে ৬০-৬৫ হাজার পর্যটক আসতে পারে বলে ধারণা করছি।
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন (টুয়াক) কক্সবাজারের সভাপতি আনোয়ার কামাল বলেন, ঈদেও পর্যটকের তেমন সাড়া নেই। কক্সবাজারের মতো, তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি এবং খাগড়াছড়িতেও পর্যটক নেই বলে জেনেছি। পদ্মা সেতু চালুর পর কুয়াকাটা সৈকত ও সুন্দরবনে পর্যটক সমাগম বাড়বে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে সেখানেও পর্যটক উপস্থিতি কম, এর মানে মানুষের বেড়ানোর রসদ নেই, সেটাই প্রমাণ করে।
হোটেল সংশ্লিষ্টদের বলছেন, এই ঈদে কক্সবাজারে তারকা হোটেলে কক্ষ ভাড়া হয়েছে ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ। আর মাঝারি মানের হোটেলে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ কক্ষ বুকিং হয়েছে।
জয়নিউজ/পিডি