দেশের বৃহৎ সার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) ফ্যাক্টরির বিষাক্ত পানিতে মৎস্যজীবিদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১২ জুলাই) চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বারশত ইউনিয়নের ১নং গবাদিয়া ওয়ার্ডের দুধকুমড়া বেরিবাধের পূর্ব পাশে অন্তত ৬টি পুকুরে সিইউএফএলের বর্জ্যের পানি ঢুকে সব মাছ মারা গেছে।
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্যজীবি ব্যবসায়ীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কিছু ক্ষতিপূরণ দিলেও স্থায়ীভাবে প্রতিকারে উদ্যোগ নিচ্ছে না কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে ঘটনাস্থলে গিয়ে বিভিন্ন পুকুর ঘুরে দেখা যায়, বিষাক্ত পানিতে মাছ মরে পুরো পুকুর সাদা হয়ে আছে। সকাল থেকে মাছগুলো পুকুর থেকে তুলে পারে স্তুপ করে রাখায় পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে দুর্ঘন্ধ।
ক্ষতিগ্রস্থ জসিম উদ্দিন খান বলেন, চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল) ফ্যাক্টরির বিষাক্ত পানি ঢুকে আমার দুই খানির প্রজেক্টে চিংড়ি, কোরাল, টেংরা, তেলোপিয়া, রুই কার্পোসহ বিভিন্ন মাছ মরে প্রায় ৭ লক্ষ টাকার মতো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
খোরশেদ আলম নামের আরেক ক্ষতিগ্রস্থ বলেন, আমার ৩ কানির প্রজেক্টে প্রায় ৩ লক্ষ টাকার মাছ মারা গেছে।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি (সিইউএফএল)র নির্গত অ্যামোনিয়া গ্যাসের পানি ও বর্জ্য কারণে বারশত ইউনিয়নের খালের আশপাশে স্থানীয়দের কয়েক বছর যাবৎ গরু, মহিষ এবং জলাশয়ের মাছ মারা যাওয়ার ঘটনা ঘটছে।
পূর্বে কারখানার বিষাক্ত গ্যাসের পানি ছাড়ার আগে এলাকায় মাইকিং করতো। কিন্তু গত কয়েক বছর ধরে কোনো ধরনের মাইকিং ছাড়াই কারখানার বিষাক্ত অ্যামোনিয়া গ্যাস ছাড়ার কারণে প্রায় সময় জলাশয়ের মাছ, গরু-মহিষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে।
সিইউএফএল কারখানার কর্তৃপক্ষের অবহেলায় ক্ষতিগ্রস্থদের আর্তনাদ যেন দেখা কেউ নেই। ভুক্তভোগী ক্ষতিগ্রস্তরা উপজেলা প্রশাসনের কাছে ন্যায় বিচারের জোর দাবি জানান।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এম এ কাইয়ুম শাহ বলেন, সিইউএফএল ফ্যাক্টরি থেকে নির্গত দূষিত পানি ঢুকে ৬টি পুকুরের সব মাছ মারা গেছে। এটা সিইউএফএলের নিত্যদিনের কাজ। তাদের এমন কাজে স্থানীয়রা সব সময় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। আমি বিষয়টি দেখবো।
চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার কোম্পানি সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আখতারুজ্জামান বলে, সিইউএফএল থেকে বিষয়টি যাচাই বাছায়ের জন্য প্রতিনিধি পাঠানো হয়েছে। আমরা বিষয়টি স্থায়ী সমাধানের চেষ্টা করছি।
জেএন/পিআর