বিশ্বজুড়ে যখন করোনাভাইরাস মহামারি চলছে, ঠিক তখনই পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানায় প্রথমবারের মতো প্রাণঘাতী মারবার্গ নামের আরেকটি ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ইবোলা ভাইরাসের মতো অত্যন্ত সংক্রামক এই ভাইরাসে দেশটিতে দু’জন আক্রান্ত হয়েছেন। সম্প্রতি দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় আশান্তি অঞ্চলের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তারা। সোমবার ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
মারবার্গ ভাইরাসে আক্রান্ত ওই দু’জনের নমুনা চলতি মাসের শুরুর দিকে পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় তাদের মারবার্গ ভাইরাস শনাক্ত হয়। পরে সেনেগালের একটি পরীক্ষাগারেও তাদের নমুনা পরীক্ষা করা হয়।
পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটির স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা বলেছেন, মৃত দুই রোগীর সংস্পর্শে এসেছিলেন সন্দেহে অন্তত ৯৮ জনকে বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
মারবার্গ ভাইরাসের কোনও চিকিৎসা এখনও আবিষ্কার হয়নি। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, পর্যাপ্ত পানি পান এবং নির্দিষ্ট উপসর্গের চিকিৎসার মাধ্যমে একজন রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করা যায়।
প্রাণঘাতী এই ভাইরাস বাদুড়ের মাধ্যমে মানবদেহে সংক্রমণ ঘটায়। পরে শরীরের তরলের মাধ্যমে মানুষ থেকে মানুষে এই ভাইরাস ছড়ায়। ভাইরাসটি মাথাব্যথা, জ্বর, পেশী ব্যথা, রক্ত বমি এবং রক্তপাতের মতো গুরুতর সমস্যা তৈরি করে। অনেক সময় মারাত্মক অসুস্থতা ডেকে আনে।
দেশটির কর্মকর্তারা মানুষকে গুহা থেকে দূরে থাকা এবং খাওয়ার আগে সব ধরনের মাংস পণ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন।
এর আগে, আফ্রিকার অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো, কেনিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং উগান্ডায় মারবার্গ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এবং বিক্ষিপ্ত সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছিল বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। তবে ১৯৬৭ সালে বিশ্বে প্রথমবার এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছিল জার্মানিতে। সেই সময় দেশটিতে এই ভাইরাসে অন্তত সাতজনের প্রাণহানি ঘটে।
২০০৫ সালে মারবার্গের প্রাদুর্ভাবে অ্যাঙ্গোলায় ২০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে। ডব্লিউএইচও বলছে, এটাই ছিল এ যাবৎকালের সবচেয়ে প্রাণঘাতী মারবার্গ প্রাদুর্ভাব।
জেএন/এএম