বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদ জানিয়ে ৬ দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে গেলে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চার শিক্ষার্থীকে স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি।
ফলে প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে ওই চার শিক্ষার্থী স্টেশনের বাইরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। কর্মসূচিতে আজ চার শিক্ষার্থীর সাথে নতুন করে আরও তিন শিক্ষার্থী যোগ দেন।
সোমবার (১৮ জুলাই) সকাল থেকে তাদের স্টেশনে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ করে আন্দোলনকারীরা জানান, কর্তৃপক্ষের বাধার মুখে স্টেশনে ঢুকতে না পেরে তাদের সাথে বাগবিতণ্ডা হয়।
এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রেলওয়ে স্টেশনের সামনে তারা অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। রেলওয়ের অব্যবস্থাপনা পরিবর্তন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।
তবে চবি শিক্ষার্থীদের রেলওয়ে স্টেশনে ঢুকতে দেয়নি অভিযোগটি সঠিক নয় বলে মন্তব্য করে চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, স্টেশনে ঢুকতে বাধা দেওয়া পুলিশের কাজ নয়।
তবে রেলওয়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের স্টেশনে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়েছে বলে স্বীকার করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর এক কর্মকর্তা।
অন্যদিকে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম রেল স্টেশনের ম্যানেজার রতন কুমার চৌধুরীর কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমরে সাথে কোন কথা বলতে রাজি হননি।
এর আগে গতকাল রবিবার (১৭ জুলাই) সকালে বাংলাদেশ রেলওয়ের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ৬ দফা দাবি নিয়ে চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান কর্মসূচি পালন শুরু করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মাহবুব হাসান, মোহাম্মদ মাসুদ, মোহাম্মদ মাহিন রুবেল এবং চতুর্থ বর্ষের ছাত্র কাজী আশিকুর রহমান।
গত মাসে ট্রেনের টিকিট কিনতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মহিউদ্দিন রনি।
রেলসেবা উন্নতের দাবিতে ঈদুল আজহার আগে ৭ জুলাই থেকে কমলাপুর রেলস্টেশনের টিকিট কাউন্টারের সামনে অবস্থান ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি শুরু করেন।
তার দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এ চার শিক্ষার্থী চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে অবস্থান নেন।
আন্দোলনকারীদের ছয় দফা দাবি গুলো হচ্ছে–
টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সহজ ডটকমের যাত্রী হয়রানি অবিলম্বে বন্ধ করা ও হয়রানির ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া।
যথোপযুক্ত পদক্ষেপের মাধ্যমে টিকিটের কালোবাজারি প্রতিরোধ, অনলাইনে কোটায় টিকিট ব্লক করা বা বুক করা বন্ধ করা ও অনলাইন-অফলাইনে টিকিট কেনার ক্ষেত্রে সর্বসাধারণের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা।
যাত্রীর চাহিদার সঙ্গে সংগতি রেখে ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধিসহ রেলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেয়া।
ট্রেনের টিকিট পরীক্ষক, তত্ত্বাবধায়কসহ অন্য দায়িত্বশীল ব্যক্তির কর্মকাণ্ড সার্বক্ষণিক নজরদারি ও শক্তিশালী তথ্য সরবরাহব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে রেলসেবার মান বাড়ানো।
ট্রেনে ন্যায্য দামে খাবার বিক্রি, বিনা মূল্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ এবং স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
জেএন/পিআর