করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যেই বিশ্বের বহু দেশে ছড়িয়েছে আরেক ভাইরাস মাঙ্কিপক্স। ফলে এ নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ। এমনকি সংক্রামক এই ভাইরাসটি কিভাবে একে-অন্যের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে ত নিয়েও রয়েছে নানা মত।
তবে বিশ্বে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে হওয়া সবচেয়ে বড় গবেষণা অনুসারে, মাঙ্কিপক্সের ৯৫ শতাংশ সংক্রমণ ছড়িয়েছে যৌন ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে। এতে যৌনাঙ্গে একক ক্ষতের মতো নতুন ক্লিনিকাল লক্ষণগুলোর কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ে গবেষণাটি প্রকাশিত হয়। মূলত মাঙ্কিপক্স নিয়ে বিশ্বের সর্ববৃহৎ এই গবেষণাটি এমন এক সময়ে প্রকাশিত হলো যখন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বিশেষজ্ঞরা এই প্রাদুর্ভাবেকে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য জরুরি অবস্থা হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করবেন কি না তা নিয়ে বিতর্ক চলছে।
বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, লন্ডনের কুইন মেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের নেতৃত্বে মাঙ্কিপক্সের সংক্রমণ নিয়ে এই গবেষণা করা হয়। গবেষণায় চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত বিশ্বের ১৬টি দেশের ৫২৮ জন মাঙ্কিপক্স রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
গবেষণার প্রথম লেখক জন থর্নহিল একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এটি জোর দিয়ে বলা গুরুত্বপূর্ণ যে, ঐতিহ্যগত অর্থে মাঙ্কিপক্স এমন কোনো যৌন সংক্রামক রোগ নয় যেটি যেকোনো ধরনের ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘তবে, আমাদের গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, এখন পর্যন্ত মাঙ্কিপক্সের বেশিরভাগ সংক্রমণ যৌন ক্রিয়াকলাপের সাথে সম্পর্কিত ছিল। প্রধানত যেসব পুরুষ অন্য পুরুষদের সাথে যৌন সম্পর্ক করেছেন।’
গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে মাঙ্কিপক্সে সংক্রমিত ৯৮ শতাংশই সমকামী বা উভকামী পুরুষ। আক্রান্তদের ৪১ শতাংশের এইচআইভি ছিল এবং গড় বয়স ৩৮ বছর। মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত এসব মানুষের আগের তিন মাসে তাদের যৌন সঙ্গীর গড় সংখ্যা ছিল পাঁচ জন।
এছাড়া ভাইরাসে সংক্রমিতদের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার আগের মাসের মধ্যে সেক্স পার্টি বা সানাসের মতো সেক্স-অন-সাইট ভেন্যুতে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
এএফপি বলছে, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার পেছেনে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে যৌন কার্যকলাপকে দায়ী করা হলেও গবেষকরা এক বিবৃতিতে জোর বলছেন, সংক্রামক এই ভাইরাসটি যেকোনো ঘনিষ্ঠ শারীরিক যোগাযোগের মাধ্যমেও, যেমন শ্বাসযন্ত্রের ফোঁটা এবং সম্ভাব্য পোশাক ও অন্যান্য পৃষ্ঠের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
জেএন/কেকে