চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাইয়ে নাছির উদ্দিন নামে আওয়ামী লীগের এক নেতাকে বিবস্ত্র করে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে একই উপজেলার যুবলীগ সভাপতির বিরুদ্ধে।
এ ঘটনার ১০ দিন পর গত বুধবার রাতে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেছেন মারধরের শিকার ওই আওয়ামী লীগ নেতা।
অভিযোগের বিষয়ে যুবলীগ সভাপতির মোবাইলে একাধিকবার কল দেওয়ার পরও ফোন রিসিভ করেন নি।
মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন বলেন, ‘নাছির উদ্দিন বাদী হয়ে গত বুধবার যুবলীগ সভাপতি মাঈনুর ইসলাম রানাসহ ১১ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন।
ভুক্তভোগী আ. লীগ নেতা নাছির উদ্দিন শুক্রবার এই প্রতিনিধিকে জানান, ‘১৭ জুলাই জোহরের নামাজ আদায় করে মসজিদ থেকে বের হওয়ার পর যুবলীগ সভাপতি মাইনুর ইসলামের নেতৃত্বে ৮-১০ জন দুষ্কৃতকারী আমাকে টেনে হিঁচড়ে বাজারের এক কোণে একটি পরিত্যক্ত স’মিলে নিয়ে যায়।
সেখানে অমানষিক নির্যাতন ও বেদড়ক মারধর করে জামা-কাপড় ছিঁড়ে নগ্ন করে ফেলে। এক পর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়লে বাজারে ফেলে চলে যায় সন্ত্রাসীরা। এলাকাবাসী আমাকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আমাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
হামলার শিকার নাছির উদ্দিন মিরসরাই উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহ সভাপতি ও ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সদস্য।
তিনি বলেন, ‘১৮ জুলাই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। ২৭ জুলাই মামলা নথিভুক্ত করা হয়।’ মামলায় যুবলীগের সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানা ছাড়াও ইমাম হোসেন শেখ, শাখাওয়াত হোসেন, সাঈদ হোসেন, সাইফুল ইসলাম, মিনহাজ উদ্দিন, আবদুর রউফ, এমজাদ হোসেন, রাকিবুল ইসলাম, মেহেদী হাসান ও নুরের ছাপাকে আসামী করা হয়েছে। সবাই যুবলীগের নেতাকর্মী।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, যুবলীগ সভাপতি মাইনুর ইসলাম রানা দীর্ঘদিন ধরে নাছির উদ্দিনকে তাদের ওয়ারিশি সম্পত্তি ক্রয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছে। নাছির তার সম্পত্তি বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় গত ১৭ জুলাই দুপুরে মাইনুর ইসলাম রানার নেতৃত্বে ১০-১২ জনের উশৃঙ্খল যুবক দল বেঁধে হাদি ফকিরহাট বাজারে পথরোধ করে অতর্কিত মারধর শুরু করে।
এক পর্যায়ে বাজারের এক পাশে একটি খুঁটির সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে বিবস্ত্র করে ফেলে। লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মারাত্মক জখম করে। প্রায় ৪৫ মিনিট ধরে নির্যাতন চালানো হয়।
পরে লোকজন এগিয়ে এসে একটি লুঙ্গি পরিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে, ঘটনার পর থানায় অভিযোগ করার পরও রাজনৈতিক প্রভাবে পুলিশ মামলা নেয়নি। বাজারের সিসিটিভি ফুটেজগুলো রানার অনুসারীরা সরিয়ে নিয়েছে। ঘটনার ১০দিন পর মামলা নিয়েছে থানা পুলিশ।
জেএন/পিআর