অনূর্ধ্ব-২০ সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে টানা তৃতীয় ম্যাচে দারুণ জয় তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। শুক্রবার ভারতের ভুবনেশ্বরের কালিঙ্গা স্টেডিয়ামে মালদ্বীপকে ৪-১ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশের যুবারা। হ্যাটট্রিক করেছেন মিরাজুল ইসলাম। একটি গোল রফিকুল ইসলামের।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকাকে ১-০ গোলে হারানোর পর ভারতকে ২-১ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নেপালের কাছে ৪-০ ব্যবধানে হেরে যায় মালদ্বীপ। তিন ম্যাচে নয় পয়েন্ট নিয়ে সবার উপরে বাংলাদেশ। তবে এখনো ফাইনাল নিশ্চিত হয়নি লাল-সবুজ জার্সিধারীদের। নিজেদের শেষ ম্যাচে নুন্যতম এক পয়েন্ট পেলেই ফাইনাল নিশ্চিত হবে বাংলাদেশের। তবে ৩১ জুলাই ভারত যদি নেপালের কাছে পয়েন্ট হারায় সেক্ষেত্রে আগেই ফাইনাল চলে যাবে বাংলাদেশ। দুই ম্যাচে ছয় পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে নেপাল। দুই ম্যাচে তিন পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় অবস্থানে ভারত। স্বাগতিকরা আজ দিনের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে ৪-০ ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে।
এ দিন শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক বাংলাদেশ দল। মালদ্বীপকে কোনো সুযোগ দেয়নি পল থমাস স্মলির দল। মিরাজ-পিয়াসদের আক্রমণ সামলাতেই হিমশিম খায় প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ। প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়ে গোল করা মিরাজকে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নামাননি স্মলি। তবে তৃতীয় ম্যাচে শুরুর একাদশে ঢুকেই মালদ্বীপের উপর ঝড় তুলেন তরুণ এই ফরোয়ার্ড।
১২ মিনিটে বাংলাদেশের আক্রমণ রুখে দেন মালদ্বীপের গোলকিপার। রফিকুলের সঙ্গে বল দেয়া নেয়া করে বক্সের সামনে থেকে মঈনের উঁচু করে নেওয়া শট খানিকটা ঝাঁপিয়ে হাতের স্পর্শে কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন শাইহান আলী। আক্রমণের ধারা বজায় রেখে ১৯ মিনিটে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। বক্সের ডান দিক থেকে পিয়াস আহমেদ নোভার ক্রস গোলকিপার ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দিলে খুলে যায় গোলের মুখ। ফিরতি বলে দেখে শুনে বল জালে পাঠান মিরাজুল ইসলাম। শ্রীলংকার বিপক্ষে একমাত্র গোলটিও এসেছিল মিরাজের পা থেকে।
তিন মিনিট বাদেই ব্যবধান বাড়ায় বাংলাদেশ। এবারও গোল করেন মিরাজুল ইসলাম। ডান দিক থেকে রফিকুলের ক্রস বক্সের বাম প্রান্ত থেকে মুরশেদ আলী হেডে বাড়িয়ে দেন গোলমুখে। মালদ্বীপের গোলকিপার ও দুই ডিফেন্ডারের মাঝখান থেকে সুযোগ সন্ধানী মিরাজের প্রথম শট ক্রসবারে লেগে ফিরে এলেও ফিরতি শট জালে জরাতে ভুল করেননি তিনি। আসরে এটি তাঁর তৃতীয় গোল।
৩২ মিনিটেই ব্যবধান ৩-০ করে ফেলে বাংলাদেশ। এবার গোল করেন মিডফিল্ডার রফিকুল ইসলাম। বাম প্রান্ত থেকে মিরাজুলের নিঁচু করে নেওয়া ক্রস ফাঁকায় থাকা রফিকুল গতির শটে জাল খুঁজে নেয়। বিরতিতে যাওয়ার আগেই মালদ্বীপের জালে চতুর্থবার বল পাঠায় বাংলাদেশ। হ্যাটট্রিক পূরণ করেন মিরাজুল ইসলাম। পিয়াস আহমেদ নোভার বাড়ানো পাস বক্সের ভেতর থেকে মিরাজের শট ফিরিয়ে দেন গোলকিপার শাইহান কিন্তু ফিরতে বলে গতির শটে বল জালে পাঠান এই ফরোয়ার্ড।
দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা চালায় মালদ্বীপ। সেই চেষ্টায় এক গোল শোধ করে তাঁরা। ৫৩ মিনিটে সতীর্থের বাড়ানো পাস ধরে বক্সের ভেতর থেকে জাইন জাফরের শট আগুয়ান গোলকিপার আসিফের গায়ে লেগে আটকে গেলেও মুহূর্তেই নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ফাঁকা জালে বল পাঠান জাফর। বাংলাদেশও পেয়েছিল ব্যবধান বাড়ানোর সুযোগ কিন্তু তা কাজে লাফাতে পারেনি মিরাজ-পিরাসরা। ৮৪ মিনিটে মিরাজের শট এবং যোগ করা সময়ে পিয়াসের শট পোস্টে লেগে ফিরলে আর ব্যবধান বাড়ানো হয়নি। আগামী ২ আগস্ট গ্রুপের শেষ ম্যাচে নেপালের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
জেএন/কেকে