সুস্থ স্বাভাবিক জীবনের আশায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে অস্ত্র-গুলি জমা দিয়ে আত্মসমর্পণ করেছে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার কুখ্যাত জলদস্যু ও সন্ত্রাসীদের ৬টি বাহিনীর ৪৩ সদস্য। অতীত কৃতকর্মে অনুতপ্ত হয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করার উদ্দেশ্যে শনিবার (২০ অক্টোবর) বেলা ১২টায় মহেশখালী আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো.আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে তারা। এ সময় তারা দেশি-বিদেশি মোট ৯৪টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৭ হাজার ৭শ’ ৩৭ রাউন্ড গুলি জমা দেয়।
৬ দস্যু বাহিনীর মধ্যে আনজু বাহিনীর ১০ সদস্য ২৪টি অস্ত্র ও ৩৪৫ রাউন্ড গোলাবারুদ, রমিজ বাহিনীর ২ সদস্য ৮টি অস্ত্র ও ১২০ রাউন্ড গোলাবারুদ, নুরুল আলম প্রকাশ কালাবদা বাহিনীর ৬ সদস্য ২৩টি অস্ত্র ও ৩৩৩ রাউন্ড গোলাবারুদ, জালাল বাহিনীর ১৫ সদস্য ২৯টি অস্ত্র ৬ হাজার ৭৯৮ রাউন্ড গোলাবারুদ, আয়ুব বাহিনীর ৯ সদস্য ৯টি অস্ত্র ও ৩৭ রাউন্ড গোলাবারুদ, আলাউদ্দিন বাহিনীর প্রধান আলাউদ্দিন ১টি অস্ত্র ও ৪ রাউন্ড গোলাবারুদ সহ আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে হাজির হয়।
জমা দেওয়া অস্ত্রের মধ্যে ছিল এসএমসি ১টি, ব্রিটিশ ৩৮ রিভলবার ১টি, দেশীয় পিস্তল ২টি, দেশীয় বন্দুক ৫২টি, দোনলা বন্দুক ২টি, ওয়ান শ্যুটার গান ১৯টি, থ্রি কোয়ার্টার ১৫টি, ২২ বোর রাইফেল ২টি।
এ বাহিনীগুলো সোনাদিয়ার পশ্চিমে, মহেশখালী ও কুতুবদিয়া চ্যানেলে ডাকাতি ও দস্যুতায় লিপ্ত ছিল।
র্যাব-৭ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মিফতাহ উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহেশখালী-কুতুবদিয়ার সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক, কক্সবাজার-৩ এর সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহম্মেদ, চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি খন্দকার গোলাম ফারুক, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এড. সিরাজুল মোস্তাফা, সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান, জেলা পরিষদের সদস্য মশরফা জন্নাত, এড. আবু তালেব।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আত্ম সমর্পণকারীদের পুনর্বাসন করা হবে। কিন্তু পূর্বের পেশায় ফিরে গেলে পরিণতি হবে কঠোর। খুন এবং ধর্ষণ ছাড়া যাদের বিরুদ্ধে লঘু অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিষয়টি সহানুভূতির সঙ্গে বিবেচনা করা হবে।
তিনি বলেন, যারা বে-পথে চলে গেছে কিন্তু অনুতপ্ত হয়েছে, তাদেরকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডাক দিয়েছেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে তারা সবাই স্বাভাবিক জীবনে ফিরে একটি শান্তিপূর্ণ দেশ বিনির্মাণে সহযোগিতা করবে। এ সময় তাদের চেক বিতরণ করেন তিনি।
এর আগে র্যাবের মহাপরিচালক বেনজির আহম্মেদ বলেন, মহেশখালী তথা কক্সবাজার জেলায় কোনো দস্যুতা চলবে না। বাকি জলদস্যু ও সন্ত্রাসী বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করে সুস্থ ও সুন্দর জীবনে ফিরে আসার আহ্বান জানান তিনি ।
জয়নিউজ/আরসি