‘মাদকবিজ্ঞানী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল সাঈদের’

মাদকবিজ্ঞানী হওয়ার পরিকল্পনা ছিল ওনাইসি সাঈদ ওরফে রেয়ার সাঈদের (৩৮)।রীতিমতো কুশ মাদক নিয়ে তিনি গবেষণা শুরু করেছিলেন। এছাড়া কুশ মাদক দিয়ে তৈরি করেছেন সার। ভবিষ্যতে তিনি দেশের বাইরে বিপুল পরিমাণে কুশ চালানের পরিকল্পনা করেছিলেন।

- Advertisement -

কিন্তু এর আগেই রাজধানীর গুলশান থেকে আটক করেছে র‌্যাব। অভিযানে বাংলাদেশে প্রথমবার অপ্রচলিত মাদক এক্সট্যাসি, কুশ, হেম্প, মলি, এডারল, ফেন্টানিলসহ অন্যান্য মাদক উদ্ধার ও প্রায় তিন কোটি টাকা মূল্যের দেশি ও বিদেশি মুদ্রা জব্দ করা হয়।

- Advertisement -google news follower

মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দুপুরে কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।

তিনি জানান, বাংলাদেশে প্রচলিত নয় কিন্তু বিভিন্ন উন্নত দেশে প্রচলিত এমন কিছু মাদকের ব্যবহার বাংলাদেশে আসছে। এতে ধীরে ধীরে আমাদের যুব সমাজ এতে আসক্ত হয়ে উঠছে। র‌্যাব গোয়েন্দা নজরদারীর মাধ্যমে এক্সট্যাসি নামক একটি নতুন মাদকের নেটওয়ার্ক সম্পর্কে জানতে পারে। এক্সট্যাসি হলো মেথানিল ডাই অক্সি মেথাফিটামিন।

- Advertisement -islamibank

অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় ১০১ গ্রাম কুশ, ৬ গ্রাম হেম্প, ০.০৫ গ্রাম মলি, ১ গ্রাম ফেন্টানল, ১৮ গ্রাম কোকেন, ১২৩ পিস এক্সট্যাসি, ২৮ পিস এডারল ট্যাবলেট ও ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ও অর্ধলক্ষাধিক মার্কিন ডলার।

পরবর্তী সময়ে তার তথ্যের ভিত্তিতে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাতকরণের উদ্দেশ্যে তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্টের মাধ্যমে অভিনব পন্থায় বিদেশি প্রজাতির কুশ তৈরির প্ল্যান্ট ও সেটআপ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ওনাইসী সাঈদ তার মাদক কারবার সংশ্লিষ্টতার উপর তথ্য প্রদান করেন।

কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার ওনাইসী সাঈদ দেশের একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল/কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করে বিদেশ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেন। বিদেশে অধ্যায়ন শেষে ২০১৪ সাল থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। প্রাথমিক পর্যায়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একটি দেশে অবস্থানকারী পূর্বপরিচিত একজন ওনাইসীকে বিভিন্ন ধরনের অপ্রচলিত মাদক সরবরাহ করতেন। পরবর্তী সময়ে ওই সরবরাহকারী উত্তর আমেরিকার একটি দেশে স্থানান্তরিত হলে, সেখান থেকে এ জাতীয় মাদক সাপ্লাই করতে থাকে। এভাবে সে আন্তর্জাতিক মাদক সিন্ডিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে নতুন মাদক এক্সট্যাসির অন্যতম মূলহোতা গ্রেফতার ওনাইসী সাঈদ। সে গত ৪ বছর ধরে এক্সট্যাসিসহ অন্যান্য উচ্চমূল্যের মাদকের কারবারের সঙ্গে জড়িত। সে এই সিন্ডিকেটটির মূলহোতা। এছাড়া বাংলাদেশে বেশ কয়েকজন তার সহযোগী হিসেবে কাজ করে। এই মাদক সে পার্সেলের মাধ্যমে বিভিন্ন দেশ থেকে সংগ্রহ করে থাকে। মাঝে মধ্যে সে নিজেও বিদেশে যেয়ে এসব মাদক লাগেজে বহন করে দেশে নিয়ে আসে। হুন্ডির মাধ্যমে মাদকের অর্থ পরিশোধ করতেন তিনি।

দেশে তার ক্রেতাদের সম্পর্কে জানা যায়, অধিকাংশ ধনাঢ্য পরিবারের সদস্য। এছাড়া অভিজাত এলাকায় বিভিন্ন পার্টিতে চাহিদার ভিত্তিতে সরবরাহ করতো।

র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, নতুন বিভিন্ন মাদকের প্রতি তার আগ্রহ সৃষ্টির ফলে সে এ নিয়ে অধ্যায়ন ও গবেষণা শুরু করে। তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা অনুযায়ী উন্নত দেশে সরবরাহের জন্য কুশ প্ল্যান্টের ফার্ম তৈরি করে। টেস্ট অ্যান্ড ট্রায়াল হিসেবে গ্রেফতার সাঈদ রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাটের ভেতর তাপ নিয়ন্ত্রণ গ্রো-টেন্ট পদ্ধতিতে চাষ শুর করে।

এরই মধ্যে তিনি ফার্ম থেকে একবার হারভেস্ট ও পরবর্তীতে প্রসেস করে কুশ মাদক প্রস্তুত করেন। যা বাংলাদেশের বিভিন্ন মাদকাসক্তের কাছে বিক্রি করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেফতার সাঈদ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন দেশে যাতায়াত করেন। তিনি বিদেশে যেয়ে দেশে আসার সময় এসব মাদক সঙ্গে নিয়ে আসতেন। এছাড়া বিদেশ থেকে কুশ মাদকের গাছের বীজ নিয়ে এসে তার বাসায় রোপণ করেন।

গ্রেফতার সাঈদ মাদক গ্রহণ করতেন কি না জানতে চাইলে র‍্যাবের এই কর্মকর্তা বলেন, সিগারেট ও অ্যালকোহল পান করলেও সাঈদ নিজে মাদক গ্রহণ করতেন না। এই মাদক তিনি শুধুমাত্র ব্যবসার জন্য এনেছিলেন। তার আর কোনো ব্যবসা নেই।

জয়নিউজ/পিডি

KSRM
পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জয়নিউজবিডি.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন news@joynewsbd.com ঠিকানায়।

এই বিভাগের আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ

×KSRM