কুষ্টিয়া থেকে নারায়ণঞ্জগামী ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার মূল হোতাসহ ১০ ডাকাতকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। ঢাকা, গাজীপুর ও চট্টগ্রামে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী রতন হোসেন। সোমবার সংবাদ সম্মেলনে ডাকাত চক্রের ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানাবে র্যাব।
এর আগে পুলিশ এই ঘটনায় আরও তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। তারা হলেন- রাজা মিয়া, আবদুল আওয়াল ও নুরনবী। তারা তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দিনগত রাতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস ৩০-৩৫ জন যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসার পথে এ ডাকাতি ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) ভোরে টাঙ্গাইল শহরের নতুন বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে মূলহোতা রাজা মিয়াকে গ্রেফতার করে টাঙ্গাইল জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরদিন শুক্রবার ভোরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর ও সোহাগপল্লী থেকে মো. আউয়াল (৩০) ও নুরনবী (২৬) নামের আরও দুই আসামিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতার তিনজনই মাদকাসক্ত বলে দাবি পুলিশের। এরমধ্যে পুলিশের আবেদনের প্রেক্ষিতে রাজা মিয়াকে পাঁচদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত।
পুলিশ জানিয়েছে, রাজা মিয়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার বল্লা গ্রামের হারুন অর রশিদের ছেলে, আউয়াল গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে আর নুরনবী একই উপজেলার শিলাবহ পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাহেজের ছেলে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) সন্ধ্যায় টাঙ্গাইলের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রুমি খাতুন ভুক্তভোগী নারীর জবানবন্দি নেন। এসময় ওই নারী বাসে ঘটে যাওয়া পৈশাচিক ঘটনার রোমহর্ষক বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার (২ আগস্ট) দিনগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে ঈগল পরিবহনের বাসটি সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশে কয়েকজন ডাকাত বাসে ওঠে। পরে যাত্রীদের হাত-পা-চোখ বেঁধে মারধর ও সম্পদ লুটপাট চালায়। এসময় বাসে থাকা এক নারীকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে ডাকাত সদস্যরা। এরপর রুট পাল্টে রাত সাড়ে ৩টার দিকে টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ মহাসড়কের মধুপুরের রক্তিপাড়া জামে মসজিদ এলাকায় রাস্তার পাশের বালির ঢিবিতে বাসটি উল্টে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা। আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ওই সদস্যরা টানা তিন ঘণ্টা যাত্রীদের ওপর এমন ভয়াবহ অত্যাচার চালায় বলে জানায় পুলিশ।
পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসকর্মীরা ওই বাসে থাকা যাত্রীদের উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে বুধবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এ ঘটনায় বাসটিতে থাকা হেকমত মিয়া নামের কুষ্টিয়ার এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২ জনকে আসামি করে মধুপুর থানায় বাস ডাকাতি ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। এরপরই জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে গোয়েন্দা পুলিশ।
জেএন/কেকে