সময় তখন দুপুর ২টা। চট্টগ্রামের কর্ণফুলি নদীর জোয়ারের পানি প্রবাহিত হয়ে নগরীর বিভিন্ন খালে প্রবেশ করতে শুরু করেছে। তেমনি চাক্তাই খালেও পানিতে তখন টুবু টুবু। আর তাই দেখে কিছু যুবক উচ্ছসিত।
পাঁচ-ছয় জনের এক দল কিশোর-যুবকের মনে শখ জাগে। ঠিক করেছেন এ জোয়ারের পানিতেই তারা আজ গোসল করবেন আর মজা করবেন।
তখনও তারা জানতো না এটা গোসলের স্থান নয়, বরং মৃত্যুকূপ। জানলে হয়তো গোসলের ভয়ংকর সিদ্ধান্ত থেকে তারা পিছিয়ে আসতো।
তবে তা হয়নি, কারণ মৃত্যু তাদের কাছে টেনে নিয়েছে। খালের লোহার ব্রীজ এলাকায় পার্শ্ববর্তী পাঁচতলা ভবন থেকে একসাথেই সবাই লাফ দেন চাক্তাই খালে। সবাই উঠে এলেও মামুন ও হৃদয় আর উঠে আসতে পারেনি।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে চারটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল পানির নিচে মাটিতে গেঁথে থাকা অবস্থায় নিখোঁজ মামুনের লাশ উদ্ধার করে। এর আধা ঘন্টা পর খালের নিচে আটকে থাকা হৃদয়ের লাশও উদ্ধার করা হয়।
জানা গেছে, আজ শনিবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে জোয়ারের সময় খাতুনগঞ্জের সোনামিয়ার বিল্ডিং থেকে লাফ দিলে মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটে। দুজনের মধ্যে গলায় রড ঢুকে গেলে মামুন (১৮) ও খালের পানির নিচে থাকা প্লাস্টিকে আবর্জনায় পা আটকে ডুবে মারা যায় হৃদয় (১৩)।
মারা যাওয়া দুজন হলেন- বাকলিয়া থানাধীন মহাজন পাড়া এলাকার আলী আহমেদের ছেলে মামুন (১৮) ও একই এলাকার মাহবুব উদ্দিনের ছেলে হৃদয় (১৩)।
হৃদয় আর মামুন ওই এলাকায় এক দুর সম্পর্কীয় আত্মীয়ের দোকানে কাজ করতেন বলে জানিয়েছেন নিহত হৃদয়ের খালা শেলী বেগম।
লামাবাজার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের জ্যৈষ্ঠ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে প্রায় এক থেকে দেড় ঘন্টা চেষ্টার পর চাক্তাই খালে জোয়ারের পানিতে নিখোঁজ দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তিনি ধারণা করছেন পাঁচতলা ভবন থেকে লাফ দেয়ায় তারা খালের পানির নিচে মাটিতে ও লোহার রডে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আর কুলে উঠতে পারেনি। পরে পানির নিচে নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে দুজনের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
লাশ দুটি উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে জানায় বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রহিম।
জেএন/পিআর