বৃষ্টির অপেক্ষায় ছিলেন কৃষক। বর্ষা শেষ, জমিতে পানি জমেনি। বিলম্ব হলেও অগভীর নলকূপের (শ্যালো মেশিন) সেচ দিয়ে করছেন আমন ধান চাষ। পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এবং রোদের প্রখর তেজের কারণে সংকুলান হচ্ছে না সেচে। শুকিয়ে যাচ্ছে রোপা আমন।
তিন-চার দিন পরপর পানি দিয়েও মাটি ভিজিয়ে রাখা যাচ্ছে না। দ্রুতই মাটি ফেটে যাওয়ায় সেচের পানি বেশি লাগছে। ফলে বাড়ছে চাষের খরচ। কথাগুলো বলছিলেন চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার আমুচিয়ার কৃষক স্বপন বড়ুয়া। তিনি ৪০শতক জমিতে রোপা আমন ধানের চাষ করেছেন।
আরেক কৃষক শাহ আলম জানান, প্রতি শতকে ৪০টাকা বা ঘণ্টায় ১৭০টাকা হিসাবে সেচ দিয়ে জমি ভেজাতে হচ্ছে। বর্ষায় বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকলেও আশানুরূপ বৃষ্টি হয়নি। ফলে জমিতে চাষ দেওয়া যায়নি। তাই বাধ্য হয়ে সেচ দিয়ে চাষ করতে হচ্ছে। কাটা-মাড়াইয়ের খরচ বাদে আমন চাষে প্রতি ৪০ শতকে এখন খরচ হচ্ছে ১৩ হাজার টাকা।
উপজেলার বগাচরা ও মগ বিলে চাষকৃত জমিতে আমনে চারা রোপণ করলেও পানির অভাবে শুকিয়ে মরে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে ধানগাছগুলো লাল হয়ে গেছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন উত্তম বড়ুয়া ও অমিয় বড়ুয়া।
তাঁরা জানান, উপজেলার হক খালে ব্রিজ নির্মাণের কারণে বর্ষার শুরুতে খালে বাঁধ দেন ঠিকাদার। এতে পর্যাপ্ত জোয়ারের পানি পাননি। তেমন বৃষ্টিও হয়নি। ফলে আমন ধানের রোপণকৃত চারা মরে যাচ্ছে। বগাচরা বিলে ৩০০ একর জমির মধ্যে আমনের চাষ হয়েছে প্রায় ৫০ একর জমিতে চাষ হয়েছে ও মগ বিলে ১০০ একর জমির মধ্যে চাষ হয়েছে ৫০ একর জমিতে চাষ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, স্বাভাবিক নিয়মে চাষ হলে যে খরচ হতো এবার তার দুই-তিনগুণ খরচ বেড়ে গেছে। এছাড়া উৎপাদন কমে যাওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস বলছে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে বোয়ালখালীতে ৪হাজার ৮৫০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আমন চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। যার মধ্যে বেশির ভাগ জমিতে চাষ হয়েছে ব্রি-২৮। এছাড়া রয়েছে ব্রি-৩৯, ব্রি-৪৯, ব্রি-৫২, ব্রি-৮৭ বিআর-২২ ও বিআর-২৩ জাতের ধান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আতিক উল্লাহ বলেন, বৃষ্টি না হওয়ায় এবার আমন ধান চাষ কিছুটা বিলম্বিত হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হবে না বলে আশা করছেন তিনি।
জেএন/কেকে