বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকের আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স ফিরিয়ে দেয়া রিকশাচালক আমিনুল ইসলামকে দেয়া হয়েছে সততা পুরস্কার। তার এই সততায় মুগ্ধ হয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার দেন।
আজ রোববার দুপুরে উত্তর সিটি করপোরেশনে হল রুমে তার হাতে পুরস্কারের টাকা তুলে দেয়া হয়। পুরস্কার পেয়ে বেশ আনন্দিতও রিকশাচালক আমিনুল।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমিনুল যে সততা দেখিয়েছেন, তা একটি দৃষ্টান্ত। আমিনুলের সততাকে সম্মান জানাতে ও এই ধরনের কাজে অন্যদের উৎসাহিত করতে এই পুরস্কার দেয়া হয়েছে। এর আগে ৫ আগস্ট রাজধানীর গুলশানে রিকশার গদির ফাঁকে বন্ধ অবস্থায় আইফোন ১৩ প্রো ম্যাক্স পান আমিনুল। পরে ৯ই আগস্ট পুলিশের মাধ্যমে আইফোনটি তিনি মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশ হলে বেশ আলোচনা শুরু হয়। পরে আমিনুল ইসলামকে পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দেন ডিএনসিসি মেয়র। ফলে সেই পুরস্কারের টাকা রিকশাচালক আমিনুল ইসলামের হাতে তুলে দেয়া হয়।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আমিনুল বলেন, মোবাইলটি (আইফোন) রিকশায় পেয়ে হাতে নিয়ে দেখি বন্ধ।
মোবাইল বন্ধ থাকায় এর মালিককে ফেরত দেবো কিভাবে। খোলা থাকলে মালিক ফোন দিতে পারে। এই চিন্তা করে রিকশা রেখে মোবাইলটির চার্জার কিনতে যাই। দোকানে চার্জার কিনতে যেয়ে দেখি চার্জারের দাম ৭০০-৮০০ টাকা। দিনে আমার ইনকাম ৫০০-৬০০ টাকা। এই টাকা দিয়ে চার্জার কীভাবে কিনবো? ‘চার্জারের দাম বেশি চাওয়ায় পরে বুদ্ধি করে মোবাইলটি থেকে সিম খুলে আমার নিজের মোবাইলে ঢুকালাম। এর একদিন পর রাত ১১টার দিকে ওই সিমে ফোন আসে। পরদিন বাড্ডা থানায় গিয়ে যে নম্বর থেকে ফোন এসেছিল সেই নম্বরসহ পুলিশের কাছে আইফোন দিয়ে আসি।’
পুরস্কার পাওয়া রিকশাচালক বলেন, মোবাইল পাওয়ার পর আমার একটাই উদ্দেশ্য ছিল যার মোবাইল তাকে ফেরত দিয়ে দেবো। মোবাইলটি ফেরত দিয়ে আমার নিজের কাছে অনেক ভালো লাগছে। তিনি বলেন, আমার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে। স্ত্রী জেসমিন আক্তারকে নিয়ে বাড্ডায় ভাড়া থাকি। আমাদের সংসারে দুই সন্তান আছে। অভাবের কারণে বেশি লেখাপড়া করতে পারিনি। দুই সন্তানকে লেখাপড়া করাতে চাই। সন্তানদের নিয়ে অনেক স্বপ্ন, অনেক আশা।
জেএন/কেকে