কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার, বীর বিক্রম মারা গেছেন।
আজ সোমবার (২২ আগস্ট) ভোর ৫টায় ঢাকায় তিনি মারা যান বলে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাহবুবুর রহমান নিশ্চিত করেছেন।
শওকত আলী সরকার দীর্ঘদিন ধরে লিভারের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি ঢাকায় চিকিৎসাধীন ছিলেন। তিনি স্ত্রী, চার মেয়ে ও দুই ছেলে রেখে গেছেন।
চিলমারী উপজেলা পরিষদ কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, তার সোমবার রাতে চিলমারীতে নেওয়া হবে। মঙ্গলবার বেলা ১১ টায় চিলমারী সরকারি ডিগ্রি কলেজ মাঠে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোকবার্তা : বীর মুক্তিযোদ্ধা শওকত আলী সরকার, বীর বিক্রমের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা মহান মুক্তিযুদ্ধে শওকত আলী সরকারের বীরত্বপূর্ণ অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ একজন নিবেদিতপ্রাণ নেতাকে হারালো এবং দেশ ও দলের অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন।
শওকত আলী সরকার ১৯৪৮ সালে চিলমারী উপজেলার রাণীগঞ্জ ইউনিয়নের দক্ষিণ ওয়ারী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইজাব আলী সরকার এবং মায়ের নাম শরিতুজ নেছা।
শওকত আলী সরকার ‘বীর বিক্রম’ খেতাবপ্রাপ্ত একজন যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে ১১ নং সেক্টরের সাবসেক্টর মাইনকারচরের অধীন কুড়িগ্রামের রৌমারী-চিলমারী অঞ্চলে সম্মুখ যুদ্ধে অংশ নেন। ওই সেক্টরের আবুল কাশেম চাঁদ কোম্পানির সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন।
একাত্তর সালের ১৩ নভেম্বর উলিপুরের হাতিয়া যুদ্ধে পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। যুদ্ধকালীন বীরত্ব ও সাহসিকতার সঙ্গে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধ চালিয়েছিলেন। এজন্য পাকিস্তানি বাহিনীর কাছে তিনি ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ ছিলেন।
মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অবস্থানের কারণে পাক বাহিনী তার বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন চিলমারী থানায় মামলা করেছিল বলে জেলার মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস থেকে জানা যায়। তার বীরত্বের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাবে ভূষিত করে।
বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনের অধিকারী শওকত আলী সরকার চিলমারী উপজেলা পরিষদের পাঁচ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা পরিষদ চালুর পর থেকেই তিনি চিলমারী উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এছাড়া প্রায় ৩৫ বছর ধরে তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
জেএন/পিআর